মাধ্যমিক ইসিহাস সাজেশন | Madhyamik Suggestion History 2026
প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা তোমাদের জন্য এই বিশেষ পোস্ট, এখানে মাধ্যমিক ইতিহাস এর দ্বিতীয় অধ্যায় এর সমস্ত ছোট, বড় প্রশ্ন উত্তর সহ আলোচনা করা হয়েছে। এখান থেকে তোমরা তোমাদের রিভিসন শুরু করতে পারো।
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নোত্তর [প্রশ্নমান - ১]
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:
1. 'বামাবোধিনী' (১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দ) পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন- [MP 2017]
(A) উমেশচন্দ্র দত্ত
(B) শিশিরকুমার ঘোষ
(C) কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
(D) দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ
2. সাধারণ জনশিক্ষা কমিটি গঠিত হয়- [MP 2017]
(A) ১৭১৩ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে
(c) ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে (লর্ড আমহার্স্টের উদ্যোগে)
3. নববিধান (১৮৮০ খ্রিস্টাব্দ) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন- [MP 2017]
(A) দয়ানন্দ সরস্বতী
(B) কেশবচন্দ্র সেন
(C) স্বামী বিবেকানন্দ
(D) মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকর
4. 'নীলদর্পণ' নাটকের ইংরেজি অনুবাদের প্রকাশক ছিলেন- [MP 2018]
(A) কালীপ্রসন্ন সিংহ
(B) মাইকেল মধুসূদন দত্ত
(C) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(D) রেভারেন্ড জেমস লঙ
5. সতীদাহ প্রথা রদ হয়- [MP 2018]
(A) ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে
(৪) ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে
(c) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে
6. সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ প্রচার করেছিলেন- [MP 2018 & পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন)
(A) বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী
(B) স্বামী বিবেকানন্দ
(C) শ্রীরামকৃয়
(D) কেশবচন্দ্র সেন
7. 'গ্রামবার্তা প্রকাশিকা' (মাসিক পত্র) প্রকাশিত হত [MP 2019]
(A) যশোর থেকে
(B) রানাঘাট থেকে
C) কুষ্টিয়া থেকে
(D) বারাসাত থেকে
8. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বি.এ. পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল- [MP 2019]
(A) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে
9. কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন-
(A) ড. এম. জে. ব্রামলি
(B) ড. এইচ. এইচ. গুডিভ
(C) ড. এন. ওয়ালিশ
(D) ড. জে. গ্রান্ট
10. প্রথম সরকারি শিক্ষা কমিশন (হান্টার কমিশন) গঠিত হয়- [MP 2020]
(A) ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে
11. দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রাহ্মসমাজে যোগ দেন- [MP 2020]
(A) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে
12. বাংলার নবজাগরণ ছিল- [MP 2020]
(A) ব্যক্তিকেন্দ্রিক
(B) প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক
(C) কলকাতাকেন্দ্রিক
(D) গ্রামকেন্দ্রিক
13. 'নীলদর্পণ' নাটকটি ছাপা হয়েছিল- [MP 2022]
(A) নদিয়াতে
(B) ঢাকায়
(C) শ্রীরামপুরে
(D) কলকাতায়
14. রামমোহন রায়-এর পরবর্তীকালে ব্রাহ্মসমাজ পরিচালনা করেন- [MP 2022]
(A) অক্ষয়কুমার দত্ত
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ
(D) তারাচাঁদ চক্রবর্তী
15. বাঙালি পরিচালিত প্রথম বাংলা সংবাদপত্রটি হল- [MP 2022]
(A) সমাচার দর্পণ
(B) সম্বাদ প্রভাকর
(C) ব্রাহ্মণসেবধি
(D) বেঙ্গল গেজেটি
16. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম স্নাতক ছিলেন- [MP 2022]
(A) সৈয়দ আমির আলি
(B) আব্দুল লতিফ
(C) দেলওয়ার হোসেন আহমেদ
(D) সৈয়দ আহমেদ
17. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তিপ্রাপক ছিলেন- [MP 2023]
(A) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
(B) বিদ্যাসাগর
(C) আনন্দমোহন বসু
(D) আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
18. 'রেনেসাঁস' শব্দটি হল একটি- [MP 2023]
(A) ইংরেজি শব্দ
(B) ফরাসি শব্দ
(C) ইতালীয় শব্দ
(D) ল্যাটিন শব্দ
19. গৌরমোহন বিদ্যালঙ্কার রচিত 'স্ত্রীশিক্ষা বিধায়ক' পুস্তিকাটি প্রকাশিত হয়- [MP 2024]
(A) ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮২২ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
20. লর্ড হার্ডিঞ্জের আমলে কাউন্সিল অফ এডুকেশন গঠিত হয়- [MP 2024]
(A) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে
(৪) ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে
21. প্রথম বাংলা দৈনিক সংবাদপত্রটি হল- [MP 2025]
(A) সম্বাদ ভাস্কর
(B) সংবাদ কৌমুদি
(C) সংবাদ প্রভাকর
(D) সমাচার দর্পণ
22. হিন্দু মেট্রোপলিটান কলেজ (১৮৫৩) প্রতিষ্ঠা করেন- [MP 2025]
(A) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(B) রাধাকান্ত দেব
(C) বিদ্যাসাগর
(D) মতিলাল শীল
23. কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দান করেন- [MP 2025]
(A) দ্বারকানাথ ঠাকুর
(B) বৈয়বচরণ শেঠ
(C) ডেভিড হেয়ার
(D) মতিলাল শীল
24. 'দ্য রিফর্মার' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন- [MP 2025]
(A) রামমোহন রায়
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) কেশবচন্দ্র সেন
(D) প্রসন্ন কুমার ঠাকুর
25. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভারতীয় উপাচার্য ছিলেন-
(A) স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
(B) জেমস উইলিয়াম কোলভিল
(C) লর্ড ক্যানিং
(D) স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
26. উনিশ শতকের বাংলায় নারীশিক্ষা বিষয়টি কেন্দ্রীয় আলোচ্য ছিল- [পর্ষদ নমুনা প্রশ্না
(A) সোমপ্রকাশ পত্রিকার
(B) বঙ্গদর্শন পত্রিকার
(C) গ্রামবার্তা প্রকাশিকার
(D) বামাবোধিনী পত্রিকার
27. 'যত মত তত পথ' বলতে শ্রীরামকৃষ্ণ বোঝাতে চেয়েছিলেন- [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
(A) নব্যবেদান্তবাদের আদর্শ
(B) সর্বধর্মসমন্বয়ের আদর্শ
(c) পৌত্তলিকতার আদর্শ
(D) নবজাগরণের আদর্শ
28. এশিয়াটিক সোসাইটি (১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দ) তৈরি হয়েছিল- [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
(A) প্রাচ্যবিদ্যা চর্চার জন্য
(B) পাশ্চাত্যবিদ্যা চর্চার জন্য
(C) সামরিক বিদ্যা চর্চার জন্য
(D) হিন্দু ও ইসলামীয় আইনচর্চার জন্য
29. উনিশ শতকে নারীশিক্ষার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানটি হল
(A) বিটন (বেথুন) স্কুল
(B) স্কটিশ চার্চ স্কুল
(C) হেয়ার স্কুল
(D) হিন্দু স্কুল
30. ইয়ং বেঙ্গল বা নব্যবঙ্গ বলা হত- [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
(A) ডিরোজিওর অনুগামীদের
(B) রামমোহনের অনুগামীদের
(C) রামকৃষ্ণের অনুগামীদের
(D) বিবেকানন্দের অনুগামীদের
31. প্রাচ্যবাদী হিসেবে পরিচিত ছিলেন-
(A) ডেভিড হেয়ার
(B) টমাস ব্যাবিংটন মেকলে
(C) উইলিয়াম জোনস্
(D) চার্লস মেটকাফ
32. দীনবন্ধু মিত্রের 'নীলদর্পণ' একটি- [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
(A) ব্যাঙ্গাত্মক নাটক
(B) জীবনীমূলক নাটক
(C) ধর্মীয় নাটক
(D) জাতীয়তাবোধমূলক নাটক
33. ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে বেমানান নামটি হল- [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
(A) রাজা রামমোহন রায়
(B) কালীপ্রসন্ন সিংহ
(c) ডেভিড হেয়ার
(D) ড্রিঙ্কওয়াটার বিটন (বেথুন)
34. 'ব্রহ্মানন্দ' নামে পরিচিত- [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
(A) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(B) রাধাকান্ত দেব
(C) কেশবচন্দ্র সেন
(D) শিবনাথ শাস্ত্রী
35. 'নীলদর্পণ' নাটকটি রচনা (১৮৬০ খ্রিস্টাব্দ) করেন-
(A) কালীপ্রসন্ন সিংহ
(B) মাইকেল মধুসূদন দত্ত
(C) দীনবন্ধু মিত্র
(D) রেভাঃ জেমস লঙ
36. 'হুতোম' কার ছদ্মনাম?
(A) রাধাকান্ত দেব
(B) কেশবচন্দ্র সেন
(C) শিবনাথ শাস্ত্রী
(D) কালীপ্রসন্ন সিংহ
37. 'হিন্দু প্যাট্রিয়ট' (ইংরেজি সাপ্তাহিক) পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন-
(A) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) গিরিশচন্দ্র ঘোষ
(D) মধুসুদন রায়
38. 'হিন্দু প্যাট্রিয়ট' (১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দ) পত্রিকার প্রথম প্রকাশক ছিলেন-
(A) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) গিরিশচন্দ্র ঘোষ
(D) মধুসূদন রায়
39. 'হিন্দু প্যাট্রিয়ট' (১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দ) পত্রিকার বিখ্যাত সম্পাদক ছিলেন-
(A) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) গিরিশচন্দ্র ঘোষ
(D) মধুসূদন রায়
40. সতীদাহ প্রথা নিবারণের (১৮২৯ খ্রিস্টাব্দ) সঙ্গে যে ভারতীয়দের নাম যুক্ত তিনি হলেন-
(A) ডিরোজিও
(B) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(C) রাজা রামমোহন রায়
(D) শিবনাথ শাস্ত্রী
41. সতীদাহের নিবারণে রামমোহন কোন্ প্রাচীন শাস্ত্র গ্রন্থের সাহায্য নেন?
(A) মনুস্মৃতি
(B) পরাশর সংহিতা
(C) উপনিষদ
(D) গীতা
42. বিধবা বিবাহ প্রবর্তনের (১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ) সঙ্গে যে ভারতীয়র নাম যুক্ত তিনি হলেন-
(A)ডিরোজিও
(B) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(C) রাজা রামমোহন রায়
(D) শিবনাথ শাস্ত্রী
43. বিধবা বিবাহের প্রচলনে বিদ্যাসাগর কোন্ প্রাচীন শাস্ত্র গ্রন্থের সাহায্য নেন?
(A) মনুস্মৃতি
(B) পরাশর সংহিতা
(C) উপনিষদ
(D) গীতা
44. 'তত্ত্ববোধিনী'-সভা-র (১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দ) প্রতিষ্ঠাতা-
(A) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) গিরিশচন্দ্র ঘোষ
(D) মধুসূদন রায়
45. 'তত্ত্ববোধিনী' পত্রিকার (১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দ) প্রকাশক-
(A) অক্ষয় কুমার দত্ত
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) গিরিশচন্দ্র ঘোষ
(D) মধুসূদন রায়
46. 'তত্ত্ববোধিনী' পত্রিকার সম্পাদক (১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দ)-
(A) অক্ষয় কুমার দত্ত
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) গিরিশচন্দ্র ঘোষ
(D) মধুসূদন রায়
47. ব্রাহ্মসমাজ (এবং 'তত্ত্ববোধিনী' সভার) মুখপত্র ছিল-
(A) বামাবোধিনী
(B) তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা
(C) ব্রাহ্ম সমাচার
(D) হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা
48. উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে নারী সমাজের মুখপত্ররূপে আত্মপ্রকাশ করেছিল-
(A) সখী
(B) বামাবোধিনী
(C) সন্ধ্যা
(D) কৃষ্ণকলি পত্রিকা
49. যে আইনে ভারতে শিক্ষাখাতে বাৎসরিক ১ লক্ষ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব (এবং কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অবসান) ঘোষিত হয়-
(A) ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন
(B) ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন
(C) ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন।
(D) ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দের রেগুলেটিং আইন (সনদ আইন = চার্টার অ্যাক্ট)
50. ভারতে সতীদাহ প্রথা নিবারণ (১৮২৯ খ্রিস্টাব্দ) করেন-
(A) লর্ড ক্যানিং
(B) লর্ড বেন্টিঙ্ক
(C) লর্ড আমহার্স্ট
(D) লর্ড কর্ণওয়ালিশ
51. বিধবা বিবাহ আইন (১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ) পাস করেন-
(A) লর্ড ক্যানিং
(B) লর্ড বেন্টিঙ্ক
(C) লর্ড আমহার্স্ট
(D) লর্ড কর্ণওয়ালিশ
52. যে আইনে ভারতে সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ হয় (১৮২৯ খ্রিস্টাব্দ)-
(A) ১৫ নং রেগুলেশন
(B) ১৬ নং রেগুলেশন
(C) ১৭ নং রেগুলেশন
(D) ১৮ নং রেগুলেশন
53. সাধারণ জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন-
(A) লর্ড আমহার্স্ট
(B) লর্ড হার্ডিঞ্জ
(C) টমাস ব্যাবিংটন মেকলে
(D) আলেকজান্ডার ডাফ
54. মেকলে মিনিটস বা মেকলের প্রতিবেদন কবে ঘোষিত হয়?
(A) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
(৪) ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে
(C)১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে
55. হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় কত খ্রিস্টাব্দে?
(A) ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৭১৮ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৭১৯ খ্রিস্টাব্দে
56. ব্রাহ্মসমাজ থেকে উদ্ভূত প্রথম শাখাটি হল-
(A) সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ
(B) ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ
(C) নববিধান ব্রাহ্মসমাজ
(D) আদি ব্রাহ্মসমাজ
57. কলকাতা মাদ্রাসা (১৭৮১ খ্রিস্টাব্দ) প্রতিষ্ঠা করেন-
(A) লর্ড কর্ণওয়ালিশ
(B) লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস
(C) লর্ড ক্লাইভ
(D) লর্ড ডালহৌসি
58. কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়-
(A) ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
(৫) ১৭১৮ খ্রিস্টাব্দে
(D)১৭১৯ খ্রিস্টাব্দে
59. কলকাতা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন-
(A) লর্ড কর্ণওয়ালিশ
(B) লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস
(C) লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক
(D) লর্ড ক্যানিং
60. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা স্নাতক (বি.এ. পাস) ছিলেন-
(A) কাদম্বিনী গাঙ্গুলি (বসু)
(B) ইন্দিরা দেবী
(C) বিধুমুখী বসু
(D) সরলাদেবী চৌধুরানি
61. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ) প্রতিষ্ঠা করেন-
(A) লর্ড কর্ণওয়ালিশ
(B) লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস
(C) লর্ড ক্লাইভ
(D) লর্ড ক্যানিং
62. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন -
(A) স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
(B) জেমস উইলিয়াম কোলভিল
(C) লর্ড ক্যানিং
(D) স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
63. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন-
(A) স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
(B) জেমস উইলিয়াম কোলভিল
(C) লর্ড ক্যানিং
(D) স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
64. অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন (১৮২৮ খ্রিস্টাব্দ) গঠন করেন-
(A) রসিককৃষ্ণ মল্লিক
(B) কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়
(B) ডিরোজিও
(D) ডেভিড হেয়ার
65. প্রথম ভারতীয় মহিলা ডাক্তার ছিলেন-
(A) কাদম্বিনী গাঙ্গুলি (বসু)
(B) ইন্দিরা দেবী
(C) স্বর্ণকুমারী দেবী
(D) চন্দ্রমুখী বসু
66. কেশবচন্দ্র সেনকে 'ব্রহ্মানন্দ' উপাধি দেন-
(A) স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) রাজা রামমোহন রায়
(D) আনন্দমোহন বসু
67. 'নব্য বেদান্তবাদ' (এবং 'ম্যান মেকিং রিলিজিয়ন')-এর প্রবক্তা
(A) কেশবচন্দ্র সেন
(B) স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
(C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) স্বামী বিবেকানন্দ
68. নব্য বৈস্তুববাদের প্রবক্তা
(A) কেশবচন্দ্র সেন
(B) স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
(C) বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী
(D) স্বামী বিবেকানন্দ
69. ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের সরকারি নীতি (১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দ) ঘোষণা করেন-
(A) চার্লস উড
(B) লর্ড ক্যানিং
(C) লর্ড বেন্টিঙ্ক
(D) টমাস ব্যাবিংটন মেকলে
70. ভারতের কোন্ প্রদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রথম প্রবর্তিত হয়?
(A) দিল্লি
(B) বোম্বাই
(C) বাংলা
(D) মাদ্রাজ
71. ভারতে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে কোন্ গভর্নর জেনারেলের শাসনকালে?
(A) লর্ড কর্ণওয়ালিশ
(B) লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস
(C) লর্ড ক্যানিং
(D) লর্ড বেন্টিঙ্ক
72. স্কুল বুক সোসাইটি (১৮১৭ খ্রিস্টাব্দ)-এর প্রতিষ্ঠাতা-
(A) আলেকজান্ডার ডাফ
(B) ডেভিড হেয়ার
(C) রবার্ট মে
(D) ড্রিঙ্ক ওয়াটার বেথুন
73. স্কুল সোসাইটি/ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি (১৮১৮ খ্রিস্টাব্দ)-এর প্রতিষ্ঠাতা-
(A) আলেকজান্ডার ডাফ
(B) ডেভিড হেয়ার
(C) রবার্ট মে
(D) ড্রিঙ্ক ওয়াটার বেথুন
74. জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন (১৮৩০ খ্রিস্টাব্দ)-এর প্রতিষ্ঠাতা-
(A) আলেকজান্ডার ডাফ
(B) ডেভিড হেয়ার
(C) রবার্ট মে
(D) ড্রিঙ্ক ওয়াটার বেথুন
75. জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন (১৮৩০ খ্রিস্টাব্দ)-এর বর্তমান নাম-
(A) হেয়ার স্কুল
(B) স্কটিশচার্চ কলেজ
(C) বিদ্যাসাগর কলেজ
(D) সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ
76. হিন্দু কলেজের বর্তমান নাম-
(A) প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়
(B) স্কটিশচার্চ কলেজ
(C) বিদ্যাসাগর কলেজ
(D) সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ
77. 'যত মত তত পথ'- বাণী প্রচার করেন-
(A) শ্রীরামকৃষ্ণদেব
(B) স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
(C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) স্বামী বিবেকানন্দ
78. আত্মীয় সভা (১৮১৫ খ্রিস্টাব্দ) প্রতিষ্ঠা করেন
(A) শ্রীরামকৃষ্ণদেব
(B) আত্মারাম পান্ডুরঙ্গ
(C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) রাজা রামমোহন রায়
79. আর্য সমাজ (১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দ, বোম্বাই) প্রতিষ্ঠা করেন-
(A) স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
(B) আত্মারাম পান্ডুরঙ্গ
(C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) রাজা রামমোহন রায়
80. 'সত্যার্থ প্রকাশ' এবং 'বেদভাষ্য' গ্রন্থের রচয়িতা-
(A) স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
(B) আত্মারাম পান্ডুরঙ্গ
(C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) রাজা রামমোহন রায়
81. প্রার্থনা সমাজ (১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দ, মহারাষ্ট্র) প্রতিষ্ঠা করেন-
(A) স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
(B) আত্মারাম পান্ডুরঙ্গ
(C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) রাজা রামমোহন রায়
82. প্রার্থনা সমাজের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা (প্রাণপুরুষ) হলেন-
(A) স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
(B) আত্মারাম পান্ডুরঙ্গ
(C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) মহাদেব গোবিন্দ রানাডে
83. 'কাঙাল হরিনাথ' নামে পরিচিত ছিলেন-
(A) হরিনাথ ঘোষ
(B) হরিনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
(C) হরিনাথ মজুমদার
(D) হরিনাথ রায়
84. ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের একজন উৎসাহী সমর্থক ছিলেন-
(A) স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
(B) আত্মারাম পান্ডুরঙ্গ
(C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) রাজা রামমোহন রায়
85. কলকাতা মেডিকেল কলেজে প্রথম শবব্যবচ্ছেদ (১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দ) করেন-
(A) ড. এম. জে. ব্রাম্মন্স
(C) ড. এন. ওয়ালিশ
(B) ড. এইচ. এইচ. গুডিভ
(D) মধুসূদন গুপ্ত
86. সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজের (১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দ) প্রথম আচার্য ছিলেন-
(A) শিবনাথ শাস্ত্রী
(B) আনন্দ মোহন বসু
(C) বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী
(D) কেশবচন্দ্র সেন
87. সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের (১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দ) প্রথম সভাপতি ছিলেন-
(A) শিবচন্দ্র দেব
(B) আনন্দ মোহন বসু
(C) বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী
(D) কেশবচন্দ্র সেন
88. সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের (১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দ) প্রথম সম্পাদক ছিলেন-
(A) শিবচন্দ্র দেব
(B) আনন্দ মোহন বসু
(C) বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী
(D) কেশবচন্দ্র সেন
89. যে আইনে বিধবা বিবাহ প্রবর্তিত হয়-
(A) ১৫ নং রেগুলেশন আইনে
(B) ১৬ নং রেগুলেশন আইনে
(C) ১৭ নং রেগুলেশন আইনে
(D) ১৮ নং রেগুলেশন আইনে
90. বিধবা বিবাহের প্রথম পাত্র ছিলেন-
(A) নারায়ণচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
(B) শ্রীশচন্দ্র তর্করত্ন
(C) শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন
(D) মদনমোহন তর্কালঙ্কার
91. বিধবা বিবাহের প্রথম পাত্রী ছিলেন-
(A) ভবসুন্দরী দেবী
(B) বিধুমুখী দেবী
(C) চন্দ্রমুখী দেবী
(D) কালীমতি দেবী
92. বিধবা বিবাহ প্রথম অনুষ্ঠিত হয় (কলকাতায়)-
(A) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে
93. বিদ্যাসাগর নিজের পুত্র নারায়ণচন্দ্রের সঙ্গে যে বিধবার বিবাহ (১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ) দেন-
(A) ভবসুন্দরী দেবী
(B) বিধুমুখী দেবী
(C) চন্দ্রমুখী দেবী
(D) কালিমতি দেবী
94. দক্ষিণ ভারতে (মাদ্রাজে) বিধবা বিবাহের স্বপক্ষে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন-
(A) বিরসালিঙ্গম পান্তুলু
(B) স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
(C) এম. জি. রানাডে
(D) জ্যোতিবা ফুলে.
95. লালন ফকিরের একমাত্র প্রতিকৃতিটি অঙ্কন করেন-
(A) নন্দলাল বসু
(B) জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
96. লালন ফকিরের বিখ্যাত কাল্পনিক অবয়বটি অঙ্কন করেন-
(A) নন্দলাল বসু
(B) জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর
97. বোম্বাইয়ে এলফিনস্টোন কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়-
(A) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে
98. বুরকি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপিত হয়-
(A) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে
99. 'দানবীর' নামে কোন্ সমাজ সংস্কারক পরিচিত ছিলেন?
(A) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(B) হাজী মহম্মদ মহসীন
(C) ডিরোজিও
(D) বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী.
100. হুগলি ইমামবাড়া (১৮৪১ খ্রিস্টাব্দ) ও হুগলি মহসীন কলেজ (১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দ) যাঁর দানের অর্থে নির্মিত হয়-
(A) রাজা রামমোহন রায়
(B) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(C) হাজী মহম্মদ মহসীন
(D) হাজী শরিয়ৎ উল্লাহ
একটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. বাংলায় কোন্ শতককে 'নবজাগরণের শতক' বলা হয়? [MP 2017]
উত্তর : উনিশ শতককে।
2. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভারতীয় উপাচার্য কে ছিলেন? [MP 2020]
উত্তর : স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।
3. কোন্ গভর্নর জেনারেলের আমলে বিধবাবিবাহ আইন পাস হয়? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তর : লর্ড ক্যানিং-এর আমলে।
4. 'টিকি কাটা জমিদার' নামে কে পরিচিত ছিলেন?
উত্তর : কালীপ্রসন্ন সিংহ।
5. ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় সংস্কৃত কলেজ কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : পণ্ডিত হেম্যান হোরাস উইলসন।
6. 'এক জাতি, এক ধর্ম, এক ঈশ্বর'-উক্তিটি করেন কে?
উত্তর : শ্রীনারায়ণগুরু।
7. শ্রীনারায়ণগুরু-র নেতৃত্বে 'শ্রী নারায়ণ ধর্ম পরিপালন যোগম' কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর : ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে।
৪. 'গুলাম গিরি' কার রচনা?
উত্তর : জ্যোতিবা ফুলে।
9. 'বিদ্যাহারাবলী' গ্রন্থের লেখক কে?
উত্তর : ফেলিক্স কেরি।
10. কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রথম মুসলিম ছাত্র/আধুনিক ভারতের প্রথম মুসলিম চিকিৎসক কে ছিলেন?
উত্তর : রহিম খান।
11. কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রথম এম. ডি. কে ছিলেন?
উত্তর : চন্দ্রকুমার দে।
12. 'কুলীন কুলসর্বস্ব' নাটকের রচয়িতা কে?
উত্তর : রামনারায়ণ তর্করত্ন।
13. 'পশ্চিম ভারতের বিদ্যাসাগর' নামে কে পরিচিত?
উত্তর : বিষুশাস্ত্রী পণ্ডিত।
14. 'ব্রাহ্মণ সেবধি' গ্রন্থের রচয়িতা কে?
উত্তর : রাজা রামমোহন রায়, ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা ছদ্মনামে এই গ্রন্থ রচনা করেন।
15. হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার প্রথম নাম কী ছিল?
উত্তর : বেঙ্গল রেকর্ডার।
16. সাপ্তাহিক হিন্দু প্যাট্রিয়ট কবে দৈনিক সংবাদপত্রে রূপান্তরিত হয়?
উত্তর : ১৮৯২ সালে।
17. 'গ্রামীণ সংবাদপত্রের জনক' কোন্ পত্রিকাকে বলা হয়?
উত্তর : গ্রামবার্তা প্রকাশিকা।
18. নব্যবঙ্গ দলের একজন সদস্যের নাম লেখো।
উত্তর : রসিককৃষ্ণ মল্লিক/কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়/প্যারিচাঁদ মিত্র/রামতনু লাহিড়ি।
19. কোন্ সমাজ সংস্কারকের আন্দোলনের ফলে সতীদাহ প্রথা রদ হয়?
উত্তর : রাজা রামমোহন রায়।
20. ব্রিটিশ শিক্ষানীতির মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর : অনুগত কেরানি তৈরি করা।
21. চার্লস উড কে ছিলেন?
উত্তর : কোম্পানির বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি।
22. উডের নির্দেশনামা/উডস ডেসপ্যাচ' কবে ঘোষিত হয়।
উত্তর : ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে।
23. শিকাগো ধর্মসভা কবে অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর : ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে।
24. শিকাগো ধর্মসভার শ্রেষ্ঠ বক্তা কে ছিলেন?
উত্তর : স্বামী বিবেকানন্দ।
25. রামকৃষ্ণ মিশন (১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দ) কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : স্বামী বিবেকানন্দ।
26. রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মুখপত্র কী ছিল?
উত্তর : (পাক্ষিক) উদ্বোধন পত্রিকা।
27. 'ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ'/'ভারত পথিক'/'আধুনিক ভারতের ইরাসমাস' কাকে বলা হয়?
উত্তর : রাজা রামমোহন রায়কে।
28. ভারতের প্রথম সংবাদপত্র কোন্টি?
উত্তর : ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত বেঙ্গল গেজেট/ হিকিস গেজেট। (সম্পাদক-জেমস অগাস্টাস হিকি) [ইংরেজি সাপ্তাহিক]
29. বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র কোনটি?
উত্তর : দিগদর্শন (মাসিক পত্রিকা) [১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে এপ্রিল মাসে প্রকাশিত।] (সম্পাদক-মার্শম্যান)
30. বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সাপ্তাহিক সংবাদপত্র কোল্টিন্ট?
উত্তর : সমাচার দর্পণ [১৮১৮ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে প্রকাশিত।] (সম্পাদক-মার্শম্যান)
31. বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম দৈনিক সংবাদপত্র কোল্টিন্ট?
উত্তর : সংবাদ প্রভাকর [১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত।। (সম্পাদক-ঈশ্বরচন্দ্রগুপ্ত)
32. 'বৈদিক যুগে ফিরে যাও' কার উক্তি?
উত্তর : স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী।
33. 'তুহফাৎ-উল-মুয়াহিদিন' কার রচনা?
উত্তর : রাজা রামমোহন রায়।
34. 'শ্রীরামপুর কলেজ' কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : উইলিয়াম কেরি (১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে)।
35. ভারতে 'চুঁইয়ে পড়া শিক্ষানীতি' (/ফিলট্রেশন থিওরি) কে চালু করেন?
উত্তর : টমাস ব্যাবিংটন মেকলে (১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে)।
36. 'শুদ্ধি আন্দোলন' কে প্রবর্তন করেন?
উত্তর : স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী।
37. 'সত্যশোধক সমাজ' কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : জ্যোতিরাও ফুলে (১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দ)।
38. 'দক্ষিণ ভারতের বিদ্যাসাগর' কাকে বলা হয়?
উত্তর : বীরসালিঙ্গমকে।
39. সরকারি চাকুরিতে ইংরেজি ভাষাজ্ঞান অপরিহার্য বলে ঘোষণা করেন কে?
উত্তর : লর্ড হার্ডিঞ্জ (১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে)।
40. হিন্দু কলেজের (১৮১৭ খ্রিস্টাব্দ) একজন প্রতিষ্ঠাতার নাম লেখো।
উত্তর : স্যার হাইড ইস্ট/বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়/ডেভিড হেয়ার/রাধাকান্ত দেব।
41. ভারতে কোম্পানির উদ্যোগে গড়ে ওঠা পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যার প্রথম প্রতিষ্ঠানের নাম কী?
উত্তর : কলকাতা মেডিকেল কলেজ।
42. সতীদাহ প্রথা বন্ধের বিরোধিতা করে রক্ষণশীলরা কোন্ পত্রিকা প্রকাশ করেছিল?
উত্তর : সমাচার চন্দ্রিকা।
43. সতীদাহ প্রথা বন্ধের সমর্থনে রামমোহন কোন্ পত্রিকায় জনমত গড়ে তোলেন?
উত্তর : সম্বাদ কৌমুদি।
44. 'ইয়ং বেঙ্গল' কাদের বলা হয়?
উত্তর : হিন্দু কলেজের তরুণ অধ্যাপক ডিরোজিও-র অনুগামীদের।
45. 'বর্ণপরিচয়', 'কথামালা', 'বোধোদয়' গ্রন্থগুলি কার রচনা?
উত্তর : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের।
46. মেট্রোপলিটন কলেজ (১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দ) কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
47. ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠীর একটি মুখপত্রের নাম করো।
উত্তর : 'পার্থেনন'/'জ্ঞানান্বেষণ'/'ক্যালাইডো-স্কোপ'/'এনকোয়ারার'/এথেনিয়াম।
48. 'গোলদিঘীর গোলামখানা' কোন্ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বলা হত?
উত্তর : কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে।
49. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম গ্র্যাজুয়েট (বি.এ. পাস/স্নাতক) হন কে?
উত্তর : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়/যদুনাথ বসু।
50. বাউল গানের সর্বশ্রেষ্ঠ শিল্পী/বাউল সম্প্রদায়ের প্রবর্তক কে?
উত্তর : লালন ফকির।
51. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য কে জমি দান করেন?
উত্তর : দ্বারভাঙার মহারাজা মহেশ্বর সিং বাহাদুর।
52. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আইন কলেজ কবে স্থাপিত হয়?
উত্তর : ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে (স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়-এরতত্ত্বাবধানে)।
53. বিদ্যোৎসাহী সভা (১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দ) কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : কালীপ্রসন্ন সিংহ।
54. 'ধর্মসভা' কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : রাজা রাধাকান্ত দেব (১৮২৯ খ্রিস্টাব্দ)।
55. আলেকজান্ডার ডাফ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম লেখো।
উত্তর : জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন (বর্তমান স্কটিশ চার্চ কলেজ)।
56. বামাবোধিনী/গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা কবে প্রকাশিত হয়?
উত্তর : ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে।
57. হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা কবে প্রকাশিত হয়?
উত্তর : ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে।
58. হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় কে ছিলেন?
উত্তর : 'হিন্দু প্যাট্রিয়ট' পত্রিকার বিখ্যাত সম্পাদক।
59. ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটির প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তর : রাজা রাধাকান্তদেব।
60. 'শব্দকল্পদ্রুম' কে রচনা করেন?
উত্তর : রাজা রাধাকান্ত দেব।
61. ব্রাহ্ম সমাজের প্রথম সচিব/সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তর : তারাচাঁদ চক্রবর্তী।
62. নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীকে 'ভ্রান্ত পুঁথি পড়া বুদ্ধিজীবি' বলে কে সমালোচনা করেছেন?
উত্তর : ডেভিড কফ।
63. নব্যবঙ্গীয়দের কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ার সাথে তুলনা করেছেন কে?
উত্তর : কিশোরীচাঁদ মিত্র।
64. 'বেদ সমাজ' (১৮৬৪) কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : কেশবচন্দ্র সেন।
65. 'দক্ষিণ ভারতের ব্রাহ্মসমাজ' (১৮৭১) কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : শ্রীধরালু নাইডু।
66. 'জাতি মীমাংসা' কার লেখা?
উত্তর : শ্রীনারায়ণগুরু।
67. সারদা সদন (১৮৮৯) কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : পণ্ডিতা রামাবাঈ।
68. 'রাজামুন্দ্রি সমাজ সংস্কার সমিতি' (১৮৭৮) কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : বীরসালিঙ্গম পাণ্ডুলু।
69. মাসিক 'গ্রামবার্তা প্রকাশিকা' কবে সাপ্তাহিক পত্রিকায় পরিণত হয়?
উত্তর : ১৮৭১ সালে।
70. হিন্দু বিধবা বিবাহের পক্ষে কোন্ পত্রিকায় প্রথম মত প্রকাশ করা হয়?
উত্তর : তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায়।
71. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি প্রদান কবে প্রথম চালু হয়?
উত্তর : ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে।
72. কাঙাল হরিনাথের জীবনীকার কে ছিলেন?
উত্তর : জলধর সেন।
73. শ্রীরামকৃষ্ণদেবের জীবনীকার কে ছিলেন?
উত্তর : রামচন্দ্র দত্ত।
একটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. শ্রীরামকৃষ্ণ রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মিথ্যা [MP 2017 & পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
2. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা এম. এ. ছিলেন কাদম্বিনী বসু (গাঙ্গুলি)। মিথ্যা [MP 2019]
3. স্কুল বুক সোসাইটি (১৮১৭ খ্রিস্টাব্দ) প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের জন্য বাংলায় স্কুল প্রতিষ্ঠা করা। মিথ্যা [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
4. 'হুতোম প্যাঁচার নকশায়' উনিশ শতকের কলকাতার কথা জানা যায়। সত্য [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
5. সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ প্রচার করেছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। সত্য [Model Activity Task, July, 2021]
6. উডের ডেসপ্যাচ/নির্দেশনামাকে (১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দ) ম্যাগনাকার্টা বা মহাসনদ বলা হয়। সত্য
7. উইলিয়াম জোন্স ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। সত্য
৪. ভারতে চিকিৎসাবিদ্যার পাঠক্রমে শব ব্যবচ্ছেদকে অন্তর্ভুক্ত করেন হেনরি হ্যারি গুডিভ। সত্য
9. বেথুন ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু ফিমেল স্কুল/হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। সত্য
10. পটলডাঙা অ্যাকাডেমির বর্তমান নাম হেয়ার স্কুল। সত্য
11. ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপন করেন লর্ড ওয়েলেসলি। সত্য
12. কেশবচন্দ্র সেন তাঁর নাবালিকা কন্যা সুনীতি দেবীকে কোচবিহারের রাজার সঙ্গে বিবাহ দেন। সত্য
13. ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার ন্যাশনাল থিয়েটারে 'নীলদর্পণ' নাটক প্রথম মঞ্চস্থ হয়। সত্য
14. ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ বন্ধ হয়ে যায় এবং এর বিকল্প রূপে ইংল্যান্ডের হেইলিবেরি নামক স্থানে নতুন কলেজ গড়ে ওঠে। সত্য
15. ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের উডের নির্দেশনামার পরিপ্রেক্ষিতে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। সত্য
দুই - তিনটি বাক্যে উত্তর দাও ঃ
1. বাংলায় নারী শিক্ষাবিস্তারে রাজা রাধাকান্ত দেবের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো। [MP 2017]
উত্তরঃ হিন্দু কলেজ, স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠায় অন্যতম উদ্যোগী রাজা রাধাকান্ত দেব নারী শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। বেথুন স্কুল, ডাফ স্কুল গঠনে এবং নারীদের পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করতে বিভিন্ন সভা-সমিতির আয়োজনে তাঁর ঐতিহাসিক ভূমিকা বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে।
2. ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বিভক্ত হল কেন? [MP 2017]
উত্তরঃ ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বিভক্ত হয়েছিল সংস্কারের প্রশ্নে। কেশবচন্দ্র সেনের খ্রিস্টধর্মপ্রীতি, গুরুবাদের প্রতি আসক্তি, নিজের নাবালিকা কন্যা সুনীতি দেবীর সঙ্গে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের বিবাহদান প্রভৃতিকে কেন্দ্র করে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজের অভ্যন্তরে কেশবচন্দ্রের সঙ্গে তার অনুগামীদের তীব্র মতবিরোধ তৈরি হয় এবং এরই ফলশ্রুতিতে আনন্দ মোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী, বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী প্রমুখ তরুণ অনুগামীরা ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ ত্যাগ করে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হন।
3. 'মেকলে মিনিটস্' কী? [MP 2018]
উত্তরঃ ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শিক্ষা বিষয়ক দ্বন্দু চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। এমতাবস্থায় জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি টমাস ব্যাবিংটন মেকলে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা সংক্রান্ত যে বিখ্যাত প্রতিবেদন পেশ করেন তা 'মেকলে মিনিটস' নামে পরিচিত। এই প্রতিবেদনে মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং বলেন যে, উচ্চ ও মধ্যবিত্তের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষা বিস্তৃত হলে 'Filtration theory' অনুযায়ী তা ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।
4. সমাজ সংস্কারে নব্যবঙ্গদের ভূমিকা কী ছিল? [MP 2018]
উত্তরঃ হিন্দু কলেজের শিক্ষক ডিরোজিও এবং তাঁর অনুগামী ছাত্ররা যাঁরা ইয়ংবেঙ্গল নামে পরিচিত ছিলেন তাঁরা হিন্দু ধর্মের প্রচলিত কুসংস্কার ও ধর্মীয় সংকীর্ণতার বিরোধীতা করেছিলেন। এঁরা মূলত যুক্তিবাদী ও প্রগতিপন্থী ছিলেন। তাঁরা যেমন কাউ মূর্তি পূজা, উপবীত ধারণের বিরোধিতা করেছিলেন তেমনি স্ত্রী শিক্ষার দুহাত Suggestions প্রসার, বাক্ স্বাধীনতার স্বপক্ষে সোচ্চার হয়েছিলেন। [পর্ষদ নমুনা উত্তর]
5. সংবাদপত্র এবং সাময়িক পত্রের মধ্যে পার্থক্য কী? [MP 2019]
উত্তর রোজকার ঘটে যাওয়া ঘটনার বিবরণ থাকে দৈনিক সংবাদপত্রে, সংবাদপত্র মূলত প্রতিবেদন মূলক; অন্যদিকে সাময়িক পত্র হল বিশ্লেষণধর্মী এবং এটি সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক এমনকি বার্ষিক সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
সংবাদপত্র সস্তা দামের কাগজে বাঁধাইহীন ভাবে প্রকাশিত হয়; অন্যদিকে সাময়িক পত্র তুলনামূলক দামি কাগজে বাঁধাই আকারে প্রকাশিত হয়।
ঔপনিবেশিক ভারতে দৈনিক সংবাদপত্রের একটি উদাহরণ হল 'সংবাদ প্রভাকর'; সাময়িকপত্রের উদাহরণ হল মাসিক 'বঙ্গদর্শন', সাপ্তাহিক 'সোমপ্রকাশ' প্রভৃতি।
6. 'নববিধান' কী? [MP 2020]
উত্তর শ্রীরামকৃষ্ণদেবের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ব্রাহ্ম নেতা কেশবচন্দ্র সেন সর্বধর্মসমন্বয়ের লক্ষ্যে ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে 'নববিধান' ঘোষণা করেন। হিন্দুধর্মের সনাতন রীতি-নীতি ও পদ্ধতি-প্রকরণের সঙ্গে বৈয়ব ও খ্রিস্টধর্মীয় আদর্শের সমত সংমিশ্রণে তাঁর এই 'নববিধান' ঘোষিত হয় এবং তিনি প্রতিষ্ঠা করেন 'নববিধান ব্রাহ্মসমাজ'।
7. এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের প্রধান উদ্দেশ্য কী ছিল? [MP 2020]
উত্তরঃ এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের প্রথম তথা প্রধান উদ্দেশ্য ছিল খ্রিস্ট ধর্মের প্রচার। বস্তুতপক্ষে, খ্রিস্টের বাণী ও ধর্মোপদেশ সাধারণ ভারতবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। তবে ধর্ম প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে সামান্য পরিমাণে হলেও তাঁরা এদেশে আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষা প্রদান করেছিলেন এবং সরকারি উদ্যোগের অন্তত তিন দশক পূর্বেই এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের গুরুদায়িত্ব তাঁরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন।
৪. স্কুল বুক সোসাইটি কেন প্রতিষ্ঠিত হয়? [MP 2022]
উত্তরঃ ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ডেভিড হেয়ার কিছু ভারতীয় শিক্ষাব্রতীর সাহচর্যে কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন স্কুল বুক সোসাইটি। উদ্দেশ্য ছিল, ইংরাজি ভাষায় পাঠ্য পুস্তক রচনা এবং সুলভে বা বিনামূল্যে ভারতীয় ছাত্রদের মধ্যে বিতরণ তথা গণশিক্ষার প্রসার।
9. মধুসূদন গুপ্ত স্মরণীয় কেন? [MP 2022]
উত্তরঃ মধুসূদন গুপ্ত ছিলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজের একাধারে ছাত্র ও শিক্ষক। এখানে থাকাকালীন ছাত্রাবস্থায় সমস্ত সামাজিক প্রতিবন্ধকতা ও গোঁড়ামিকে উপেক্ষা করে ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি তিনি প্রথম বাঙালি ছাত্র হিসেবে 'শব' ব্যবচ্ছেদ করেন যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে তিনি এখান থেকে ডাক্তারি পাশ করেন। 'ফার্মকোপিয়া' ও 'অ্যানাটমি' নামক ইংরাজি গ্রন্থ দুটির যথাক্রমে বাংলা ও সংস্কৃতে অনুবাদ তাঁর অন্যতম কীর্তি।
10. লর্ড হার্ডিঞ্জের শিক্ষা বিষয়ক নির্দেশনামা কেন গুরুত্বপূর্ণ? [MP 2022]
উত্তরঃ ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে লর্ড হার্ডিঞ্জ তাঁর বিখ্যাত ঘোষণায় ভারতে সরকারি চাকুরি ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষাজ্ঞান অপরিহার্য বলে ঘোষণা করেন। বস্তুতপক্ষে, এই ঘোষণার পর থেকেই ভারতীয়দের মধ্যে, বিশেষত মধ্যবিত্ত হিন্দু সমাজের মধ্যে ইংরাজি ভাষা শিক্ষার এক বিপুল উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায় এবং ভারতের নানা প্রান্তে অসংখ্য পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে।
11. 'বাংলার নবজাগরণ' বলতে কী বোঝ? [MP 2022]
উত্তরঃ পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সংস্কৃতি সংস্পর্শে এসে ঊনিশ শতকে বাঙালি সমাজে এক যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদী আলোড়ন দেখা যায়। এর প্রভাবে সমকালীন ধর্ম, সমাজ শিক্ষা, সাহিত্য, রাজনীতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে যে ব্যাপক, গভীর ও বৈপ্লবিক জাগরণ ঘটে তাকে অনেকে বঙ্গীয় নবজাগরণ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
12. নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী কাদের বলা হত? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]। 'নব্যবঙ্গ আন্দোলন' বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ হিন্দু কলেজের তরুণ ও মননশীল অধ্যাপক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও-র নেতৃত্বে ওই কলেজের একদল ছাত্র উনিশ শতকের প্রথমার্ধে হিন্দু ধর্ম ও সমাজের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেন এবং পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণে মেতে ওঠেন। তাঁরা 'নব্যবঙ্গ' নামে পরিচিত এবং তাঁদের পরিচালিত আন্দোলনই হল 'নব্যবঙ্গ আন্দোলন।'
13. ব্রাহ্ম সমাজের যে-কোনো দুটি সমাজ সংস্কারমূলক কাজের উল্লেখ করো।
উত্তরঃ ব্রাহ্মসমাজ জাত-পাতের বৈষম্যের বিরোধিতা করেছিল এবং নারী-পুরুষের সমানাধিকারের পক্ষে সওয়াল করেছিল। এ ছাড়া সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন ব্রাহ্মসমাজের প্রধান সংগঠক রাজা রামমোহন রায়। ব্রাহ্ম-সমাজের আন্দোলনের জেরেই ব্রিটিশ সরকার ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে 'তিন আইন' পাস করতে বাধ্য হয়।
14. স্বামী বিবেকানন্দের বেদান্তবাদ কেন 'নব্য'? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মীয় চিন্তাধারার গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল নব্য বেদান্তবাদ। প্রাচীন অদ্বৈত দর্শনে বলা হয় যে, 'ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা'। ব্রহ্ম ও আত্মা পৃথক কিছু নয়। অর্থাৎ, ব্রহ্ম ছাড়া জগতের পৃথক কোনো অস্তিত্ব নেই। স্বামী বিবেকানন্দ প্রাচীন এই অদ্বৈত দর্শনের নিজস্ব ব্যাখ্যা দিয়ে এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। তিনি বলেন সর্বত্রই ব্রহ্মের উপস্থিতি। সুতরাং, সাধারণ মানুষের সেবা করাই হল ব্রহ্মের সেবা করা। তাই স্বামীজির ধর্মমত 'নব্য বেদান্তবাদ' নামে পরিচিত।
15. ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনের গুরুত্ব কী ছিল? [MP 2024]
উত্তরঃ ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনের ২৯ নং ধারায় বলা হয় যে, ভারতীয়দের শিক্ষার জন্য কোম্পানি এখন থেকে বছরে অন্তত ১ লক্ষ টাকা ব্যয় করবে। ভারতে ইংরেজ শাসনে শিক্ষাখাতে এটাই প্রথম ব্যয় বরাদ্দ। কিন্তু এই ১ লক্ষ টাকা প্রাচ্য না পাশ্চাত্য-কোন্ শিক্ষাখাতে ব্যয়িত হবে, তার স্পষ্ট নির্দেশিকা আইনে না থাকায় অচিরেই নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
16. ডেভিড হেয়ার স্মরণীয় কেন? [Model Activity Task, July, 2021]
উত্তরঃ স্কটল্যান্ডের ঘড়ি ব্যবসায়ী ডেভিড হেয়ার কলকাতায় হিন্দু কলেজ (১৮১৭খ্রিস্টাব্দ) প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় সহায়তা করেন এবং নিজের উদ্যোগে পটলডাঙা অ্যাকাডেমি (হেয়ার স্কুল) স্থাপন করেন। ইংরেজি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক রচনা ও সুলভে বিতরণের জন্য তাঁর উদ্যোগে ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে 'স্কুল বুক সোসাইটি' প্রতিষ্ঠিত হয়। পাশ্চাত্য শিক্ষাপ্রসারে তাঁর এই অবদানের জন্য ডেভিড হেয়ারকে 'মহাত্মা' বলে অভিহিত করা হয়।
17. প্রাচ্যবাদী (ওরিয়েন্টালিস্ট) ও পাশ্চাত্যবাদী (অ্যাংলিসিস্ট) বিতর্ক বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনের ২৯ নং ধারায় ভারতে শিক্ষাপ্রসারের জন্য যে ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়-তা প্রাচ্য না পাশ্চাত্য-কোন্ শিক্ষাখাতে ব্যয়িত হবে তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। প্রাচ্যবাদীদের পক্ষে ছিলেন কোলব্রুক, উইলসন এবং পাশ্চাত্যবাদীদের পক্ষে ছিলেন ডাফ, মেকলে, রাজা রামমোহন প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ। এটিই প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী বিতর্ক নামে পরিচিত।
18. Filtration theory' বা 'ক্রমনিম্ন পরিষ্কৃত নীতি' বলতে কী বোঝ? [MP 2023]
উত্তর লর্ড বেন্টিঙ্কের আইন সচিব ও খ্যাতনামা পণ্ডিত টমাস ব্যাবিংটন মেকলে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে তার বিখ্যাত 'মিনিটস' বা প্রতিবেদনে বলেন যে, প্রথমে উচ্চ ও মধ্যবিত্তের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষা বিস্তৃত হবে এবং তারপর ধীরে ধীরে তা সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। ফিলটার বা জল পরিস্রতকরণ যন্ত্রের জল যেমন নীচে চুঁইয়ে পড়ে, তেমনি পাশ্চাত্য শিক্ষাও ক্রমশ উচ্চ ও মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। এটিই 'Filtration theory' নামে পরিচিত।
19. উডের নির্দেশনামা বলতে কী বোঝ? [পর্যদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তরঃ কোম্পানির বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে একটি শিক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশনামা জারি করেন। এতে সরকারি উদ্যোগে প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা, একটি স্বতন্ত্র শিক্ষাবিভাগ স্থাপন, তিনটি প্রেসিডেন্সি শহরে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রভৃতির কথা বলা হয়। এগুলি উডের নির্দেশনামা নামে খ্যাত। এর উপর ভিত্তি করেই আধুনিক ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। তাই ভারতে পাশ্চাত্যশিক্ষা বিস্তারের ইতিহাসে একে 'ম্যাগনাকার্টা' বা মহাসনদ বলা হয়।
20. বিদ্যাসাগরকে Traditional modernizer বা ঐতিহ্যবাদী আধুনিকতার জনক কে, কেন বলেছেন?
উত্তরঃ বিদ্যাসাগর ভারতের সনাতন ঐতিহ্য, মূল্যবোধ ও আদর্শের সঙ্গে পাশ্চাত্যের আধুনিক শিক্ষা-সংস্কৃতি, সামাজিক চিন্তা, নারী প্রগতি, নারী মুক্তি ইত্যাদি ভাবধারায় সমন্বয় সাধন করে সমাজ সংস্কারে ব্রতী হয়েছিলেন। তাই অমলেশ ত্রিপাঠী তাঁকে "Traditional modernizer' বা 'ঐতিহ্যবাদী আধুনিকতার জনক' বলে অভিহিত করেছেন।
21. ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কে, কবে কী উদ্দেশ্যে স্থাপন করেন?
উত্তরঃ বড়োলাট লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের ২৪ নভেম্বর কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপন করেন। উদ্দেশ্য ছিল-ভারতে আগত তরুণ ব্রিটিশ সিভিলিয়ানদের ভারতীয় ভাষা, রীতি-নীতি ও প্রশাসনিক আদব-কায়দা সম্পর্কে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। এই উদ্দেশ্যে স্থানীয় পন্ডিতদের এই কলেজে অধ্যাপকরূপে নিযুক্ত করা হয়।
22. 'ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ' কাকে কেন বলা হয়?
উত্তরঃ রাজা রামমোহন রায় হলেন প্রথম ভারতীয়, যিনি ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কার ও কুপ্রথার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলেন, নারী জাতির উন্নতিতে সচেষ্ট হন, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে সমন্বয় সাধন করেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য নিয়মতান্ত্রিক পথে আন্দোলনের সূচনা করেন এবং সর্বোপরি পথপ্রদর্শকরূপে সামাজিক অগ্রগতির পথে যাবতীয় বাধাগুলিকে দূর করতে সচেষ্ট হন। তাই তাঁকে 'ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ' বলা হয়।
23. 'তিন আইন' বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ বাল্যবিবাহ রদ, পুরুষের বহুবিবাহ রদ এবং অসবর্ণ বিবাহ আইনসিদ্ধ করা হল 'তিন আইন'। ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্মসমাজের প্রচেষ্টায় 'তিন আইন' পাস হয়েছিল।
24. এশিয়াটিক সোসাইটি কে, কবে কী উদ্দেশ্যে স্থাপন করেন?
উত্তরঃ স্যার উইলিয়াম জোন্স ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটি স্থাপন করেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল এদেশে প্রাচ্য ভাষা ও বিদ্যাচর্চার প্রসার।
25. ডিরোজিও কেন কর্মচ্যুত হন?
উত্তরঃ উৎসাহের আতিশয্যে নব্যবঙ্গীয়রা হিন্দু ধর্ম ও ঐতিহ্যের উপর তীব্র আক্রমণ হেনে অন্ধ পাশ্চাত্যানুকরণে মেতে ওঠেন। তাদের স্বাধীনতা স্পৃহা ও উগ্র সংস্কারকামিতা শাসক ব্রিটিশের পাশাপাশি সনাতনপন্থী ভারতীয়দেরও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন করে তোলে। হিন্দু কলেজ কর্তৃপক্ষ নব্যবঙ্গীয়দের প্রেরণাদাতারূপে ডিরোজিওকেই দায়ী করেন এবং তাঁকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন।
26. 'গ্রামবার্তা প্রকাশিকা'য় সমাজের কোন্ কোন্ দিকগুলি তুলে ধরা হত?/গ্রামবর্ত্তা প্রকাশিকা কেন জমিদারের রোষের মুখে পড়েছিল?
উত্তরঃ 'গ্রামবার্তা প্রকাশিকা' যথার্থ অর্থেই সমকালীন বাংলার গ্রাম সমাজের দর্পণ। পত্রিকার প্রায় প্রতিটি সংখ্যা জুড়েই জমি, জমিদার, কৃষক, মহাজন, নীলকর এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ের আলোচনা থাকত। জমিদারি নিপীড়ন, পুলিশের অসাধুতা, বিচারের নামে অবিচার, সাধারণ মানুষের অসহায়তার খবর দিনের পর দিন অসীম সাহসে ছেপেছে 'গ্রামবার্তা প্রকাশিকা'।
27. নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে হিন্দু প্যাট্রিয়ট কীভাবে জনমত গড়ে তোলে?
উত্তরঃ নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে হিন্দু প্যাট্রিয়ট নীলচাষিদের প্রায় মুখপত্রে পরিণত হয়েছিল। সম্পাদক হরিশচন্দ্র নীলচাষিদের সমর্থনে এগিয়ে আসেন ও তাঁর অনলবর্ষী লেখনীর মাধ্যমে দরিদ্র প্রজাদের উপর নীলকরদের অত্যাচার ও নীলবিদ্রোহ সংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদ নিয়মিত প্রকাশ করতে থাকেন।
28. 'শ্রীরামপুর ত্রয়ী' কাদের বলা হত?
উত্তরঃ ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে প্রথম সদর্থক ভূমিকা নিয়েছিলেন শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশনের তিন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য-উইলিয়াম কেরি, জোশুয়া মার্শম্যান ও উইলিয়াম ওয়ার্ড। এঁরা একত্রে 'শ্রীরামপুর ত্রয়ী' নামে পরিচিত। তাঁদের উদ্যোগে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে ছাপাখানা ও ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। সংবাদপত্রের প্রকাশনাতেও তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।
29. আলেকজান্ডার ডাফ স্মরণীয় কেন?
উত্তরঃ স্কটিশ মিশনারী আলেকজান্ডার ডাফ বাংলাদেশে স্কটিশ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন।
বাংলায় ইংরেজি শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে তিনি বেশ কয়েকটি ইংরেজি বিদ্যালয় স্থাপন করেন। এগুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত 'জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন', যেটি পরবর্তীকালে 'স্কটিশ চার্চ' কলেজ নামে পরিচিত হয়। এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারে তাঁর অবদানের জন্য তিনি ইতিহাসে স্মরণীয়।
30. ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারে লর্ড বেন্টিষ্কের ভূমিকা কীরূপ?
উত্তরঃ ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের ইতিহাসে লর্ড বেন্টিষ্কের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মেকলে মিনিটসের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ভারতে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারকে তিনি সরকারি নীতি হিসেবে ঘোষণা করেন। তাঁর উদ্যোগে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়। উল্লেখ্য, এটিই ছিল ভারতবর্ষে সরকারি উদ্যোগে স্থাপিত পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রথম প্রতিষ্ঠান।
31. বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী কে ছিলেন?
উত্তরঃ উনিশ শতকে বাংলার ধর্ম ও সমাজ সংস্কার আন্দোলনের ইতিহাসে বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজের নেতারূপে তিনি লোকসেবা ও সমাজ সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। পরবর্তী জীবনে বৈয়ব ভাবাপন্ন হয়ে ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গে যোগসূত্র ছিন্ন করলেও সমাজ ও ধর্ম সংস্কারের মূল আদর্শ থেকে তিনি আমৃত্যু বিচ্যুত হননি। তাঁকে 'নব্য বৈষুব আন্দোলনের জনক' হিসেবে অভিহিত করা হয়।
32. হাজী মহম্মদ মহসীন বিখ্যাত কেন?
উত্তরঃ উনিশ শতকে বাংলায় মুসলিম সমাজে শিক্ষার প্রসার, জনকল্যাণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন 'হাজী মহম্মদ মহসীন'। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বিপুল ধন সম্পত্তির প্রায় সবটাই তিনি মুসলিম সমাজের শিক্ষার উন্নতি কল্পে ব্যয় করেন। তাঁর দানের অর্থেই গড়ে ওঠে হুগলি ইমামবারা (১৮৪১ খ্রিস্টাব্দ), ইমামবারা হাসপাতাল (১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দ), হুগলি কলেজ (বর্তমান মহসীন কলেজ), মাদ্রাসা, মহসীন বৃত্তি প্রভৃতি। ছিয়াত্তরে মন্বন্তরের সময় তিনি মুক্ত হস্তে সরকারি তহবিলে অর্থ দান করেন। তিনি 'দানবীর' নামে ইতিহাসে সমধিক পরিচিত।
33. লালন ফকিরের গানে কীভাবে মানবধর্মের জয়গান গাওয়া হয়েছে?/ সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ ফুটে উঠেছে?
উত্তরঃ উনিশ শতকের ধর্মীয় সংকীর্ণতার দিনে লালন ফকিরের সমগ্র জীবন তথা কর্মকান্ড সর্বধর্ম সমন্বয়ের এক উজ্জ্বল ইতিবৃত্ত। ধর্মীয় প্রশ্নে লালন ছিলেন চরম সহনশীল এবং জাতিভেদ প্রথার ঘোর বিরোধী। বাউল গানের মধ্য দিয়ে তিনি জাতিভেদের ঊর্ধ্বে মানবধর্মের জয়গান গেয়েছেন। তাঁর গানে ফুটে উঠেছে জাতপাত, ধর্মীয় ভেদাভেদ মুক্ত মানব সমাজ গঠনের ব্রত-"এমন মানব সমাজ কবে সৃজন হবে/যেদিন হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান/জাতি-গোত্র নাহি রবে।"
34. উনিশ শতকের বঙ্গীয় নবজাগরণকে কলকাতা কেন্দ্রিক জাগরণ বলা হয়েছে কেন? [Model Activity Task, July, 2021]
উত্তরঃ পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সংস্কৃতির সংস্পর্শে এসে উনিশ শতকের বাঙালি সমাজে যে যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদী আলোড়ন দেখা যায়, তাকেই সাধারণভাবে 'বঙ্গীয় নবজাগরণ' রূপে আখ্যায়িত করা হলেও এর ব্যাপ্তি ছিল খুবই সীমিত এবং তা ছিল একান্তভাবেই কলকাতা শহর কেন্দ্রিক। শহর কলকাতার কিছু মুষ্টিমেয় ইংরেজি শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গের মধ্যেই এই তথাকথিত নবজাগরণ সীমাবদ্ধ ছিল এবং গ্রাম বাংলায় এই নবজাগরণের বিন্দুমাত্র প্রভাব অনুভূত হয়নি। তাই বঙ্গীয় নবজাগরণকে কলকাতা কেন্দ্রিক জাগরণ বলা হয়েছে।
35. কালীপ্রসন্ন সিংহ কেন 'হুতোম' ছদ্মনাম গ্রহণ করেছিলেন?
উত্তরঃ হুতোম নিশাচর এবং সে কারণেই রাতের অন্ধকারে ঘটে চলা মনুষ্য সমাজের যাবতীয় অপকর্মের একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী। সাহিত্যসেবী কালীপ্রসন্ন 'হুতোম' ছদ্মনাম গ্রহণের অন্তরালে ভদ্রবেশী মানব সমাজের আপাত ভালোমানুষীর আড়ালে লুকিয়ে থাকা কদর্য রূপটিকেই ব্যাঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে তুলে ধরতে চেয়েছেন।
বস্তুতপক্ষে, এহেন ছদ্মনাম গ্রহণ লেখকের গভীর সমাজ-সচেতনতাবোধের পরিচায়ক।
36. রাজা রামমোহন রায় কেন পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন?
উত্তরঃ আরবি, ফারসি ও সংস্কৃত সাহিত্যে প্রভূত পান্ডিত্য থাকা সত্ত্বেও রাজা রামমোহন পাশ্চাত্য শিক্ষার একজন উৎসাহী সমর্থক ছিলেন। তিনি মনে করতেন যে, আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার উপর ভিত্তি করেই নব ভারত গড়ে উঠবে। তাঁর মতে, একমাত্র পাশ্চাত্য তথা ইংরেজি শিক্ষা বিস্তৃত হলেই ভারতীয়দের পচনশীল সমাজব্যবস্থা এবং ধর্ম ও চরিত্রের অধঃপতিত নৈতিকতার উন্নতি ঘটবে। তাই তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষাকে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
37. হরিনাথ মজুমদার স্মরণীয় কেন?
উত্তরঃ বঙ্গীয় জাতীয় জাগরণ ও গ্রামীণ সাংবাদিকতার ইতিহাসে কুমারখালির পাঠশালার পন্ডিত হরিনাথ মজুমদার এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি 'কাঙাল হরিনাথ' নামেই সমধিক পরিচিত। জাতীয় জাগরণের ওই দিনগুলিতে হরিনাথ বেছে নিয়েছিলেন শহর কলকাতা নয়, দারিদ্র্য ও সমস্যা-জর্জরিত গ্রাম বাংলাকে। জমিদারি নিপীড়ন, পুলিশের অসাধুতা, বিচারের নামে অবিচার, সাধারণ মানুষের অসহায়তার খবর দিনের পর দিন তিনি ছেপেছেন অসীম সাহসে। ফলত জমিদারের প্রলোভন ও আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছেন বারংবার। সর্বস্ব খুইয়েও প্রজাস্বার্থের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। তিনি 'কাঙাল ফকিরচাঁদ' ছদ্মনামে বাউল গানও রচনা করেন।
38. শিক্ষা বিস্তারে শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশনের ভূমিকা উল্লেখ করো। [Model Activity Task, August, 2021]
উত্তরঃ ভারতে পাশ্চাত্যশিক্ষার বিস্তারে প্রথম সদর্থক ভূমিকা নিয়েছিলেন শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশনের তিন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য-উইলিয়াম কেরি, জোশুয়া মার্শম্যান ও উইলিয়াম ওয়ার্ড। এঁরা একত্রে 'শ্রীরামপুর ত্রয়ী' হিসেবে পরিচিত হন। তাঁদের উদ্যোগে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে ছাপাখানা এবং ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে কলেজ (শ্রীরামপুর কলেজ) প্রতিষ্ঠিত হয়। সংবাদপত্রের প্রকাশনাতেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। তাদের প্রতিষ্ঠিত শতাধিক বিদ্যালয়ে প্রায় দশ হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায়।
একটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. স্বামী বিবেকানন্দের ধর্ম সংস্কারের আদর্শ ব্যাখ্যা করো। [MP 2017]
উত্তরঃ আধুনিক ভারতের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের প্রিয়তম শিষ্য নরেন, স্বামী বিবেকানন্দ নামেই যিনি ইতিহাসে সমধিক পরিচিত।
স্বামী বিবেকানন্দের ধর্ম সংস্কার
নব্য বেদান্তের প্রচারকঃ স্বামীজির ধর্মীয় চিন্তাধারার গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল 'নব্য বেদাক্ষ্মন্তবাদ'। বিবেকানন্দ প্রাচীন অদ্বৈত দর্শনের নিজস্ব ব্যাখ্যা দিয়ে এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। সুসংস্কার, অস্পৃশ্যতা, জাতিভেদ, ধনী-দরিদ্রের প্রভেদ দূর করে তিনি জাতিকে ঐক্য ও কর্মশক্তিতে উদ্দীপ্ত হওয়ার আহ্বান জানান। তাঁর নব্য বেদান্তের অভিমুখ ছিল-জগতের কল্যাণেই নিজের মোক্ষলাভ।
জীবসেবার আদর্শঃ তাঁর ধর্মদর্শনে 'শিবজ্ঞানে জীবসেবা'র আদর্শ প্রতিফলিত হয়েছে। বিশ্ববাসীর প্রতি তাঁর দীক্ষা- 'জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।'
বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের আদর্শ প্রচারকঃ ১৮৯৩ সালের শিকাগো ধর্ম সম্মেলনে ভারতের আধ্যাত্মিকতার সনাতন স্বরুপ তিনি বিশ্ববাসীর সম্মুখে তুলে ধরেন। বেদান্তের নতুন ব্যাখ্যা এবং তার সহায়ক উপাদানরূপে কর্মযোগের প্রচার করে বিশ্ববাসীকে অমৃতলোকের সন্ধান তিনি দিয়েছেন। যুদ্ধ ও ধ্বংসের পরিবর্তে শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্বই সমৃদ্ধির একমাত্রপথ।
মানুষ গড়ার ধর্মঃ স্বামীজির কাছে 'ধর্ম' কেবলমাত্র আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানাদির সমষ্টিমাত্র নয়, 'ধর্ম' তাঁর কাছে মানুষ গড়ার হাতিয়ার। যে ধর্ম মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে, সেই ধর্মকে তিনি গ্রহণ করেননি। জাতি-ধর্ম-বর্ণ ভেদহীন সনাতন মানবধর্মের জয়গান তিনি গেয়েছেন। মন্তব্য বিবেকানন্দের 'Man making religion' এবং 'নব্য বেদান্তবাদ'-এর
আদর্শ মানুষের মনের জমিকে করেছে উর্বর। তাঁর ভাবাদর্শে বিশ্ববাসী হয়েছে স্নাত। পরাধীন দেশবাসীকে তিনি দিয়েছেন নতুন করে বাঁচার প্রেরণা। ঋষি অরবিন্দের পরিভাষায়- 'বিবেকানন্দই আমাদের জাতীয় জীবনের গঠনকর্তা।'
2. 'বামাবোধিনী' পত্রিকা কিভাবে নারীসমাজের মুখপত্রে পরিণত হয়েছিল?
উত্তরঃ ভারতীয় নারীমুক্তি আন্দোলন ও সাংবাদিকতার ইতিহাসে 'বামাবোধিনী' এক স্মরণীয় নাম।
প্রকাশঃ ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে উমেশচন্দ্র দত্তের সম্পাদনায় বামাবোধিনী সভার মুখপত্ররূপে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় মাসিক পত্র 'বামাবোধিনী'।
উদ্দেশ্যঃ 'বামাবোধিনী'র মূল উদ্দেশ্য ছিল-'অন্তঃপুর মধ্যে বিদ্যালোক প্রবেশ করিয়ে' বামা সমাজের বন্ধন মুক্তি তথা নারী শক্তির জাগরণ।
কর্মকাণ্ডঃ 'বামাবোধিনী' তার প্রথম সংখ্যাতেই স্ত্রী শিক্ষার দাবী জোরালো ভাবে উত্থাপন করে। সেই সঙ্গে বাল্য বিবাহ এবং বার্ধক্য বিবাহেরও বিরোধিতা করা হয়। সমকালীন ধর্ম, নীতি শিক্ষা, বিজ্ঞান, ঘরোয়া ঔষধপত্র, শিশুর যত্ন, প্রতিপালন, নারী শিক্ষার গুরুত্ব প্রভৃতি বিষয়েও দিনের পর দিন সমৃদ্ধ হত 'বামাবোধিনী'র পাতাগুলি। নারীর প্রতি বঞ্চনা, অপরাধ ও শোষণের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছিল 'বামাবোধিনী'। 'বামাবোধিনী'র প্রচ্ছদে লেখা থাকত এক আপ্ত বাণী-'কন্যাকেও পালন করিবেক এবং যত্নের সহিত শিক্ষা দিবেক।'
গুরুত্বঃ 'বামাবোধিনী'র প্রধান গুরত্ব ছিল-এই পত্রিকা দীর্ঘদিন ধরে নারী জাতির চিন্তা-ভাবনাকে প্রভাবিত করে নারী-জনমত গঠনের ব্যবস্থা করে দেয়। সেই সঙ্গে মেয়েদের লেখা গল্প, কবিতা, তাদের কৃতিত্ব, সাফল্য এমনকি রাজনৈতিক আন্দোলন তাদের অংশগ্রহণের খবর নিয়মিত প্রকাশ করে নারী সমাজের মুখপত্রে পরিণত হয় 'বামাবোধিনী'।
মন্তব্য নারী জাগরণের ইতিহাসে 'বামাবোধিনী' পত্রিকার গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। অবলা বামা সমাজকে জ্ঞানালোকে প্রবেশের পথ দেখিয়ে 'বামাবোধিনী' যথার্থই ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে।
3. পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকা উল্লেখ করো। [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন & MP 2023]
উত্তরঃ আরবি, ফারসি ও সংস্কৃত সাহিত্যে প্রভৃত পান্ডিত্য থাকা সত্ত্বেও রাজা রামমোহন পাশ্চাত্য শিক্ষার একজন উৎসাহী সমর্থক ছিলেন। তিনি মনে করতেন যে, আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার উপর ভিত্তি করেই নব ভারত গড়ে উঠবে।
পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকা
পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন: পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে রাজা রামমোহন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা নেন। হিন্দু কলেজের প্রতিষ্ঠা (১৮১৭ খ্রি:) ও পরিচালনার সঙ্গে তিনি সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন বলে অনেকে মনে করেন। তিনি নিজ ব্যয়ে অ্যাংলো হিন্দু স্কুল (১৮১৫ খ্রি:) ও বেদান্ত কলেজ (১৮২৫ খ্রি:) প্রতিষ্ঠা করেন। ডেভিড হেয়ারের শিক্ষা প্রসারের কাজে তিনি ছিলেন মুখ্য সহায়ক। স্কটিশ মিশনারী আলেকজান্ডার ডাফ কলকাতায় জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠায় (১৮৩০ খ্রি:) ব্রতী হলে রাজা রামমোহন তাঁর প্রধান পৃষ্ঠপোষকে পরিণত হন।
আমহার্স্টকে পত্র প্রেরণ: ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনে বরাদ্দকৃত সরকারী ১ লক্ষ টাকা প্রাচ্য শিক্ষা খাতে ব্যয়ের উদ্যোগ নেওয়া হলে পাশ্চাত্যপন্থী রাজা রামমোহন এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে বড়লাট লর্ড আমহার্স্টকে পত্র প্রেরণ করেন। ঐতিহাসিক এই পত্রে তিনি সংস্কৃত শিক্ষার অসারতা প্রমাণ করে ভারতে আধুনিক ও যুগপোযোগী পাশ্চাত্যশিক্ষা প্রবর্তনের জোরালো দাবী জানান। ভারতীয় নবজাগরণের ইতিহাসে এক মূল্যবান দলিল রাজা রামমোহন রায়ের এই ঐতিহাসিক পত্রটি।
মন্তব্য প্রাচ্যের শাশ্বত চিন্তাধারার সঙ্গে পাশ্চাত্যের আধুনিক শিক্ষা ও যুক্তিবাদের সমন্বয় ঘটিয়ে রাজা রামমোহন এক নবভারত গঠনের স্বপ্ন দেখেন। যথার্থই তিনি ছিলেন ভারতীয় নবজাগরণের অগ্রদূত।
4. উনিশ শতকের বাংলায় সমাজ সংস্কার আন্দোলনে ব্রাহ্মসমাজগুলির কীরূপ ভূমিকা ছিল? [MP 2018 & 2023]
উত্তরঃ ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামমোহন রায় তাঁর একেশ্বরবাদী ধর্মমত প্রচারের উদ্দেশ্যে যে 'ব্রাহ্মসভা' গড়ে তোলেন, পরবর্তীকালে তা একাধিক শাখা-উপশাখায় বিভক্ত হয়ে গেলেও বাস্তবিক পক্ষে এগুলির সবই ছিল বৃহত্তর ব্রাহ্ম আন্দোলনের শরিক এবং মানব হিতৈষণার ব্রতে ব্রতী। ভারতীয় জনজীবনে ব্রাহ্ম আন্দোলনের অবদান অনস্বীকার্য।
ব্রাত্ম আন্দোলনের অবদান
(i) কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গঠন: কুসংস্কারের নিগড়ে আবদ্ধ রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের বুকে ব্রাহ্ম সমাজই প্রথম সজোরে আঘাত হানে। ব্রাহ্ম ধর্মের একেশ্বরবাদ ও সমন্বয়বাদ পরবর্তীকালে হিন্দুধর্মের নবজাগরণে সাহায্য করেছিল। সমাজ সংস্কারের লক্ষ্যে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে কেশবচন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন 'ভারতীয় সংস্কার সভা'। জনকল্যাণ, সমাজ সংস্কার ও জনগণের নৈতিক উন্নতিসাধন এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ছিল।
(ii) নারী সমাজের উন্নয়ন: হিন্দু নারীদের ওপর বহুকাল ধরে চলে আসা মধ্যযুগীয় কুপ্রথা সতীদাহের বিরুদ্ধে প্রথম জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন ব্রাহ্মসমাজের প্রধান সংগঠক রাজা রামমোহন রায়। তাঁর আন্দোলনের জোরেই ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার এই কুপ্রথাকে আইনত নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
স্ত্রীশিক্ষা ও স্ত্রী স্বাধীনতার প্রসারের ক্ষেত্রে ব্রাহ্মসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে কেশবচন্দ্রের প্রেরণায় বয়স্কা মহিলাদের নিজ নিজ গৃহে শিক্ষাদানের জন্য ব্রাগ্নিকাগণ নিযুক্ত হন। এছাড়াও ব্রাহ্মসমাজ থেকে 'ব্রাহ্ম
বালিকা বিদ্যালয়' স্থাপিত হয়। পিতার সম্পত্তিতে কন্যার আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্রাহ্মসমাজের উদ্যোগ অনস্বীকার্য। নারী শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে কেশবচন্দ্র ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
(iii) তিন আইন পাস: ব্রাহ্ম সমাজের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলনের তীব্রতায় ব্রিটিশ সরকার ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে 'তিন আইন' পাস করতে বাধ্য হয়। এই আইন বলে, বাল্য- বিবাহ ও পুরুষের বহু বিবাহ রদ করা হয় এবং বিধবাবিবাহ ও অসবর্ণ বিবাহ আইনসিদ্ধ হয়। তাই এই আইন বহুক্ষেত্রে 'ব্রাত্ম বিবাহ আইন' নামেও পরিচিত।
(iv) নিম্নবর্গের সামাজিক উন্নয়ন: সমাজের প্রান্তিক জনসাধারণের উন্নয়নের জন্য ব্রাহ্ম সমাজ উদ্যোগী হয়। অন্ত্যজ শ্রেণির উন্নয়নের পাশাপাশি পাটকল শ্রমিকদের জন্য নৈশ বিদ্যালয় স্থাপন, মদ্যপান-বিরোধী প্রচার ইত্যাদি কর্মসূচির রূপায়ণ করে ব্রাহ্মসমাজ। বয়স্ক শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে তিনি ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে নৈশ্য বিদ্যালয় স্থাপন করেন। শ্রমজীবি মানুষের উন্নতিকল্পে কেশবচন্দ্রের অনুপ্রেরণায় ব্রাহ্মনেতা শশীপদ ব্যানার্জী ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন 'শ্রমজীবি সমিতি' এবং ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশ করেন 'ভারত শ্রমজীবি' পত্রিকা। বস্তুতপক্ষে এটি ছিল বাংলা তথা ভারতে শ্রমজীবি মানুষের জন্য প্রকাশিত প্রথম পত্রিকা। এছাড়াও কেশবচন্দ্রের অনুপ্রেরণায় ব্রাহ্মনেতা উমানাথ গুপ্তের সম্পাদনায় ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল 'সুলভ সমাচার' নামক সাপ্তাহিক। ব্রাহ্মসমাজ জাতপাতের বৈষম্যের বিরোধিতা করেছিল এবং নারী-পুরুষের সমানাধিকারের পক্ষে সওয়াল করেছিল।
(v) জাতীয়তাবাদের জাগরণ: জাতীয়তাবাদের জাগরণে ব্রাহ্মসমাজ, বিশেষত কেশবচন্দ্র সেনের অবদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ্য। কেশবচন্দ্রের সর্বভারতীয় ভ্রমণ ও প্রচারকার্য শিক্ষিত ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদের জাগরণে কার্যকরী ভূমিকা নেয়। ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার কেশবচন্দ্রের নেতৃত্বাধীন ব্রাহ্ম আন্দোলনকে 'প্রথম সর্ব ভারতীয় আন্দোলন' বলে আখ্যায়িত করেছেন। কেশবচন্দ্রের অনুপ্রেরণায় আত্মারাম পান্ডুরঙ্গ ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে মহারাষ্ট্রে প্রার্থনাসমাজ গঠন করেন।
অন্যান্য অবদান
(i) ব্রাহ্মসমাজ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের শ্রেষ্ঠ বিষয়গুলির সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে দেশোন্নয়নে ব্রতী হয়।
(ii) আর্ত-পীড়িতের সেবাকার্যেও ব্রাহ্মসমাজ পিছিয়ে ছিল না।
(iii) এই প্রতিষ্ঠানই ভারতকে বহু জাতীয়তাবাদী নেতা তথা ধর্ম ও সমাজ-সংস্কারক উপহার দিয়েছে।
(iv) বর্তমানে ভারতীয় সংস্কৃতিতে 'ব্রাগ্নিকা পদ্ধতি'তে শাড়ি পরিধানের যে বিশেষ রীতি প্রচলিত রয়েছে, তা ব্রাহ্মসমাজের অভ্যন্তরে ঠাকুর বাড়ির মহিলাদের দ্বারাই প্রথম সূচিত হয়েছিল।
মূল্যায়ন: অনেকে ব্রাহ্মসমাজী আন্দোলনকে 'এলিটিস্ট' এবং 'জাতীয় জীবনের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন' বলে সমালোচনা করলেও উনিশ শতকীয় বাংলা তথা ভারতের নবজাগরণে ব্রাহ্ম আন্দোলনের অবদান কোনোমতেই অস্বীকার করা যায় না।
5. 'হুতোম প্যাঁচার নকশা' গ্রন্থে উনিশ শতকের বাংলার কিরূপ সমাজ- চিত্র পাওয়া যায়? [MP 2018]
উত্তরঃ উনিশ শতকের বাংলার অবক্ষয়িত সমাজের এক জীবন্ত পটচিত্র 'হুতোম প্যাঁচার নকশা'।
লেখক: সাহিত্যসেবী কালিপ্রসন্ন সিংহ 'হুতোম' ছদ্মনামের আড়ালে এই প্রহসনটি রচনা করেন।
প্রকাশ: ১৮৬১-তে গ্রন্থটির প্রথমভাগ ও ১৮৬৩-তে গ্রন্থটির দ্বিতীয়ভাগ এবং সর্বোপরি ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে সম্পূর্ণ গ্রন্থরূপে প্রকাশিত হয় 'হুতোম প্যাঁচার নকশা'।
সমাজ চিত্র
'হুতোম প্যাঁচার নকশা' উনিশ শতকের প্রথমার্ধে কলকাতার বাবু-কালচার এবং বাংলার অবক্ষয়িত সমাজ জীবনের এক অসাধারণ ও জীবন্ত দলিল। গ্রন্থের ছত্রে ছত্রে ফুটে উঠেছে সমকালীন কলকাতার সমাজ জীবনের দুর্নীতি, কপটতা ও ভণ্ডমির বিরুদ্ধে শাণিত ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ। বাবু সমাজের গণিকাবিলাস, ভ্রুণ হত্যা, বিবিধ মাদক দ্রব্যের ব্যাপক আয়োজনকে ব্যঙ্গাত্মক ও তির্যক ভঙ্গিতে তুলে ধরা হয়েছে। দুর্গাপূজা, বারোয়ারি পূজা, চরক, রথ, স্নান যাত্রা প্রভৃতির নামে হিন্দু সমাজের ভণ্ডমি ও ভাঁড়ামির সমালোচনা করা হয়েছে। যেখানেই তিনি ভণ্ডমি দেখেছেন, সেখানেই তিনি বিদ্রুপ-বাণ বর্ষণ করেছেন। সমাজচেতনা, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের কষাঘাত, হাস্যরস-সবমিলিয়ে এটি বাংলা সাহিত্যের একটি অসামান্য গ্রন্থ। তাঁর আর এক বড়ো কৃতিত্ব হল, এই প্রথম সংস্কৃত ঘেঁষা বাংলাকে সংস্কৃত শব্দের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে তাকে কথ্য ভাষায় হাজির করেছেন। 'হুতোম'-এর চলিত ভাষা ব্যবহারের নৈপুণ্য পাঠককে মুগ্ধ করে।
মন্তব্য লেখকের রসবোধ, সাহিত্যগুণ এবং সমাজ সচেতনতাবোধ 'হুতোম প্যাঁচার নকশা'-কে কালোত্তীর্ণ করেছে। ভাষা-ভঙ্গি ও রঙ্গ মিলিয়ে গ্রন্থটি হয়ে উঠেছে 'সরস, মিষ্ট ও হৃদয়গ্রাহী'।
6. এদেশের চিকিৎসা-বিদ্যার ক্ষেত্রে কলকাতা মেডিকেল কলেজের কী ভূমিকা ছিল? [MP 2018]
উত্তরঃ ভারতের সনাতনী চিকিৎসাবিদ্যার বিপ্রতীপে আধুনিক ও পাশ্চাত্য অভিমুখী চিকিৎসাবিদ্যার অধ্যায়ন ও অধ্যাপনার কেন্দ্ররূপে ভারতভূমিতে গড়ে ওঠে কলকাতা মেডিকেল কলেজ।
প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট: বড়োলাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক চিকিৎসাবিদ্যার পঠন-পাঠনের বিষয়ে ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে একটি কমিটি নিয়োগ করেন। এই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় 'মেডিকেল কলেজ অফ বেঙ্গল', 'কলকাতা মেডিকেল কলেজ' নামেই যা ইতিহাসে সমধিক পরিচিত।
প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য: ভারতের সনাতনী চিকিৎসাবিদ্যার ওপর ইংল্যান্ডের আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের জয় ঘোষণাই ছিল এই কলেজ প্রতিষ্ঠার পশ্চাতে সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্য। বিজিত ভারতীয়দের ইউরোপীয় চিকিৎসাশাস্ত্রে অভ্যস্ত করে তোলার পাশাপাশি এই কলেজ থেকে পাশ করা সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট সার্জেন্টদের বিভিন্ন সামরিক ও অসামরিক কেন্দ্রে নিয়োগের উদ্দেশ্যে এই কলেজ প্রতিষ্ঠা পায়।
ক্রমোন্নতি: কলকাতা মেডিকেল কলেজ হল এশিয়ার দ্বিতীয় কলেজ যেখানে আধুনিক ইউরোপীয় চিকিৎসাবিদ্যা শেখানো হত। এখানে আধুনিক শল্য চিকিৎসার ব্যবস্থাপনা ও রূপায়ণে উদ্যোগী হন এর প্রথম সুপারিনটেনডেন্ট এম. জে. ব্রামলি, যিনি এই কলেজের প্রথম অধ্যক্ষের পদও অলংকৃত করেন। এই কলেজে পাঠরত ভারতীয় ছাত্রদের শারীরবিদ্যায় দক্ষ করে তুলতে গুডিভ সাহেব শব ব্যবচ্ছেদকে সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করেন এবং তাঁর তত্ত্বাবধানে ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি বাঙালি ছাত্র মধুসূদন গুপ্ত সকল প্রকার ধর্মীয় কুসংস্কার ও গোঁড়ামির ঊর্ধ্বে উঠে এখানে প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করেন।
মেডিকেল কলেজের নিজস্ব ভবন তৈরির জন্য জমি দান করেন বাঙালি শিক্ষাবিদ মতিলাল শীল। লর্ড ডালহৌসির উদ্যোগে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে কলেজের 'হাসপাতাল ভবন'-এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়। দ্বারকানাথ ঠাকুরসহ দেশীয় অভিজাতদের অনেকেই এই প্রতিষ্ঠানে অর্থ দান করেন। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মেডিকেল কলেজ থেকে প্রায় পাঁচশতাধিক ছাত্র পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যা চর্চায় পারদর্শী হয়ে ওঠে। এমনকি এখানকার কৃতি ছাত্রদের উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যে বিলেতে পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। উল্লেখ্য ভোলানাথ বসু, গোপালচন্দ্র শীল, দ্বারকানাথ বসু এবং সূর্যকুমার চক্রবর্তী ছিলেন প্রথম বিলেত ফেরত বাঙালি ডাক্তার। অচিরেই কলকাতা মেডিকেল কলেজ "ইংল্যান্ডের রয়্যাল কলেজ অফ সার্জেন" এবং "University of London"-এর স্বীকৃতি পায়।
কলকাতা মেডিকেল কলেজের দ্বার সকল বর্ণের ছাত্রদের জন্য এমনকি মেয়েদের জন্যও উন্মুক্ত ছিল। কাদম্বিনী গাঙ্গুলি ছিলেন প্রথম মহিলা চিকিৎসক এবং পরবর্তীকালে ভার্জিনিয়া মেরী মিত্র ও বিধুমুখী বসু প্রমুখ এখান থেকেই যোগ্যতার সঙ্গে চিকিৎসাবিদ্যায় উত্তীর্ণ হন।
মন্তব্য আজও বাংলা তথা ভারতবর্ষের প্রথম সারির চিকিৎসাকেন্দ্ররূপে কলকাতা মেডিকেল কলেজ তার গৌরবোজ্জ্বল অস্তিত্ব বজায় রেখে চলেছে।
7. 'নীলদর্পণ' নাটক থেকে উনিশ শতকের বাংলার সমাজের কীরূপ প্রতিফলন পাওয়া যায়? [MP 2019]
উত্তরঃ উনিশ শতকের বাংলার নিপীড়িত কৃষক সমাজের এক জীবন্ত নাট্য দলিল দীনবন্ধু মিত্রের 'নীলদর্পণ'।
প্রেক্ষাপট: বাংলার নীলচাষিদের উপর নীলকর সাহেবদের শোষণ ও অত্যাচার ও নীলবিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে কোম্পানির কর্মচারী দীনবন্ধু মিত্র ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে 'কস্যচিৎ পথিকস্য' (জনৈক পথিক) ছদ্মনামের আড়ালে রচনা করেন 'নীলদর্পণ'।
সমাজচিত্র: নীলচাষ এবং নীলকরদের অত্যাচারে বাংলার সমাজ জীবনে যে ভয়াবহ
অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, তার অশ্রুসজল কাহিনি 'নীলদর্পণ'-এ পরিবেশিত হয়েছে। অত্যাচারী নীলকর উড সাহেবের চরিত্র চিত্রণের মধ্য দিয়ে নাট্যকার নীলকরদের অত্যাচার, দমন-পীড়নের বাস্তব চিত্র অঙ্কন করেছেন। নীলকররা ছলে-বলে-কৌশলে দরিদ্র প্রজাকে কিছু টাকা দাদন দিয়ে তাকে নীলচাষে এবং উৎপন্ন নীল নীলকরদের কাছে বিনা লাভে বিক্রি করতে বাধ্য করত। প্রহার, বলপূর্বক আটক, গৃহদাহ, কৃষিসরঞ্জাম বাজেয়াপ্তকরণ, স্ত্রী-কন্যা অপহরণ, লাঞ্ছনা প্রভৃতি ছিল নীলচাষিদের নিত্যপ্রাপ্তি। এসবের বিরুদ্ধে তারা একজোট হয়েছিল। তাদের সম্মিলিত প্রতিবাদের ভাষাই ধরা পড়েছে এই নাটকে। সাধুচরণ, ক্ষেত্রমণি, তোরাপ, আদুরি প্রমুখ শ্রমজীবী চরিত্ররা হয়ে উঠেছে নীলকর বিরোধী আন্দোলনের প্রতিভূ।
ভাষান্তর : নীলচাষিদের করুণ কাহিনি শ্বেতাঙ্গ সমাজের কাছে তুলে ধরতে মাইকেল মধুসূদন দত্ত গোপনে এর ইংরেজি অনুবাদ করেন। রেভারেন্ড জেমস লঙ্ নামক জনৈক ভারত প্রেমিক খ্রিস্টান পাদ্রী 'The Indigo-Planting Mirror' শিরোনামে এই অনুবাদটি প্রকাশ করেন। কিন্তু স্বার্থ বিরোধী হওয়ায় নীলকররা লঙ্ সাহেবের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে। মামলায় পরাজিত লঙ্ সাহেবের এক মাসের কারাদন্ড ও হাজার টাকা জরিমানা হয়।
মন্তব্য 'নীলদর্পণ' যথার্থই নীল বিদ্রোহের এক জীবন্ত দলিল। অনুদিত নীলদর্পণ একদিকে যেমন শ্বেতাঙ্গ সমাজকে নীলকরদের অত্যাচার সম্পর্কে শিহরিত করে, অন্যদিকে এই নাটক সাম্রাজ্যবাদী শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাঙালির মনে প্রজ্বলিত করে দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদের বহ্নিশিখা।
8. উনিশ শতকে নারী শিক্ষা বিস্তারে ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন কী ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন? [MP 2019]
উত্তর বড়োলাটের শাসন পরিষদের আইন সদস্য ও বাংলার শিক্ষা কাউন্সিলের সভাপতি ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন বা বিটন সাহেব নারী শিক্ষার একজন উৎসাহী সমর্থক ছিলেন। তিনি স্পষ্টতই উপলব্ধি করেন যে, একমাত্র শিক্ষাই পারে যুগ-যুগান্তর-সঞ্চিত কুসংস্কারের মূলে আঘাত হেনে নারী সমাজকে আধনিকতার আলোকে উদ্ভাসিত করতে।'
নারীশিক্ষা প্রসারে বেথুন সাহেবের অবদান
'হিন্দু ফিমেল স্কুল' প্রতিষ্ঠা: স্ত্রীশিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে বেথুন সাহেবের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ অবদান হল ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, মদনমোহন তর্কালঙ্কার প্রমুখ শিক্ষাব্রতীর সহযোগিতায় 'হিন্দু ফিমেল স্কুল' বা 'নেটিভ ফিমেল স্কুল' প্রতিষ্ঠা। প্রতিষ্ঠা লগ্নে তিনি দৃঢ়প্রত্যয়ে ঘোষণা করেন-"আজকের দিনটি একটি বিপ্লবের সূচনা করতে যাচ্ছে।" বেথুন সাহেবের স্মৃতিতে পরে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম হয় 'বেথুন স্কুল' এবং ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে এটি মহাবিদ্যালয় বা কলেজের মর্যাদা লাভ করে। বাস্তবিকই এটি ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম মহিলা কলেজ। তিনি তাঁর মাসিক আয়ের অধিকাংশ এবং বিষয় আশয় তিনি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যয় ও দান করে যান।
অন্যান্য অবদানঃ বেথুন সাহেব মেয়েদের ধর্ম নিরপেক্ষ ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষাদানের পাশাপাশি সূচিশিল্প, এমব্রয়ডারি, অঙ্কনবিদ্যায় পারদর্শী করে তুলতে উদ্যোগী হন। তিনি শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে মাতৃভাষার উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। 'ফিমেল জুভেনাইল সোসাইটি', 'কলকাতা পাবলিক লাইব্রেরী' ও 'বঙ্গভাষানুবাদ সমাজ' প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনেও তাঁর অবদান অগ্রগণ্য।
মন্তব্য উনিশ শতকের বাংলায় নারী শিক্ষার বিস্তারের অন্যতম পুরোধারূপে তাঁর ঐতিহাসিক ভূমিকা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়।
9. টীকা লেখো: উডের নিদের্শনামা। [MP 2020]
উত্তরঃ কোম্পানির বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে যে শিক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশনামা জারি করেন, তা 'উডের নির্দেশনামা' বা 'উডস ডেসপ্যাচ' নামে পরিচিত।
লক্ষ্যঃ ভারতে শিক্ষার প্রসার এবং ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থাকে নিয়মতান্ত্রিক ও সুসংঘবদ্ধ-রূপে গড়ে তোলার লক্ষ্যেই উডের ডেসপ্যাচ ঘোষিত হয়েছিল।
সুপারিশ সমূহঃ উডের নির্দেশনামায়-
(i) একটি স্বতন্ত্র শিক্ষা বিভাগ স্থাপন,
(ii) প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা,
(iii) প্রেসিডেন্সি শহরগুলিতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন,
(iv) শিক্ষক-শিক্ষণ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা,
(v) বিদ্যালয়গুলির জন্য সরকারি ব্যয়-বরাদ্দ বৃদ্ধি,
(vi) 'ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইনস্ট্রাকশন' পদ সৃষ্টি,
(vii) নারী শিক্ষার প্রসার,
(viii) সাধারণ বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষার ব্যবহার,
(ix) মেধাবৃত্তি দান প্রভৃতির কথা বলা হয়।
ফলাফল: উডের সুপারিশ অনুযায়ী-
(i) প্রথমে কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে এবং পরে লাহোর ও এলাহাবাদে বিশ্ববিদ্যালয়। স্থাপিত হয়।
(ii) সর্বমোট একশো চল্লিশটি মধ্য-ইংরেজি বিদ্যালয় ও ৭৯টি পূর্ণ-ইংরেজি বিদ্যালয়কে। সরকারি অনুমোদন দেওয়া হয়।
13. রাজা রামমোহনের নেতৃত্বে সতীদাহ প্রথা বিরোধী আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। [MP 2020]
উত্তরঃ উনিশ শতকের নবজাগরিত বাংলায় ধর্ম তথা সমাজ জীবনে যে সংস্কার-যজ্ঞের সূচনা হয়, সতীদাহ প্রথা নিবারণ তার মধ্যে অগ্রগণ্য।
সতীদাহ প্রথা: মৃত স্বামীর জ্বলন্ত চিতায় সদ্য বিধবাকে নববধূর সাজে বলপূর্বক পুড়িয়ে মারাই সতীদাহ বা সহমরণ নামে হিন্দু সমাজে প্রচলিত ছিল।
রামমোহনের উদ্যোগ: রাজা রামমোহন রায় সতীদাহ প্রথা বন্ধের জন্য প্রকৃত অর্থেই এক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। লোকশিক্ষার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করে হিন্দু সমাজ থেকে এই কুপ্রথার অবসান ঘটানোর প্রচেষ্টা চালান।
ধর্মীয় প্রমাণ: রক্ষণশীল হিন্দুরা সতীদাহ প্রথার সমর্থনে 'সমাচার চন্দ্রিকা'য় নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে থাকলে রামমোহন 'মনু সংহিতা'-সহ বিভিন্ন হিন্দু শাস্ত্র ও ধর্মগ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, সতীদাহ প্রথা হিন্দু ধর্ম তথা শাস্ত্র বিরোধী। এক্ষেত্রে তাঁর 'সংবাদ কৌমুদি' পত্রিকা রক্ষণশীলদের বিরোধীতার প্রতীক হয়ে ওঠে।
প্রচার কার্য: বিভিন্ন পুস্তিকা প্রকাশের মাধ্যমে সতীদাহের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে রামমোহন জনসচেতনতা গড়ে তোলেন। ১৮১৮-১৯ খ্রিস্টাব্দে দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয় 'সহমরণ বিষয়ক প্রবর্ত্তক ও নিবর্ত্তক সম্বাদ'।
আইন পাস : শেষপর্যন্ত রামমোহনের আবেদনে সাড়া দিয়ে বড়োলাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে ১৭ নং রেগুলেশন জারির মাধ্যমে সতীদাহ প্রথাকে আইনত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
মন্তব্য সতীদাহ প্রথা নিবারণে রাজা রামমোহনের ঐতিহাসিক ভূমিকা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়। তিনি যথার্থই বঙ্গীয় নবজাগরণের পথিকৃৎ।
এগুলো ছাড়াও আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন
14. উনিশ শতকে বাংলায় নারীশিক্ষা বিস্তারে রাজা রাধাকান্তদেব কীরূপ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন? [MP 2022]
15. লর্ড মেকলে-কে কী এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রবর্তক বলা যায়? [MP 2022]
16. ব্রাহ্মসমাজের আন্দোলনে/সমাজ সংস্কারে কেশবচন্দ্র সেনের অবদান পর্যালোচনা করো।
Read More 👇
Hi, Please Do not Spam in Comments.