১. সঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখো:
১.১) ‘উত্তুরে হাওয়া’ বলতে বোঝায় হাওয়া যখন উত্তর দিক থেকে বয়ে আসে। এমন ভাবে _____ (গ্রীষ্ম/ শরৎ/ শীত/ বর্ষা) কালে হাওয়া বয়।
উত্তরঃ: শীত।
১.২) থুথ্ঠুড়ে শব্দটির অর্থ _____ (চনমনে/ জড়সড়ো/ জ্ঞানী/ নড়বড়ে)।
উত্তরঃ: নড়বড়ে।
১.৩) রূপকথার গল্পে যেটি থাকে না _____ (দত্যি-দানো/ পক্ষীরাজ/ রাজপুত্তুর/ উড়োজাহাজ)।
উত্তরঃ: উড়োজাহাজ।
১.৪) রূপকথার গল্প সংগ্রহ করেছেন এমন একজন লেখকের নাম বেছে নিয়ে লেখো (আশাপূর্ণা দেবী/ দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার/ সত্যজিৎ রায়/ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)।
উত্তরঃ: দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার।
২.১) লেখালিখি ছাড়াও সুনির্মল বসু আর কোন কাজ ভালো পারতেন?
উত্তরঃ: লেখালিখি ছাড়াও সুনির্মল বসু ভালো ছবি আঁকতে পারতেন।
২.২) তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ: সুনির্মল বসুর লেখা দুটি বইয়ের নাম হল ‘ছানাবড়া’ ও ‘হইচই’।
৩. এলোমেলো বর্ণগুলো সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো:
"থা রূ ক প" → রূপকথা।"র ত্তু জ রা পু" → রাজপুত্তুর।
"জ ক্ষী রা প" → পক্ষীরাজ।
"ব প ম ন ন" → মনপবন।
"জ গু বি আ" → আজগুবি।
৪. অন্তমিল আছে এমন পাঁচ জোড়া শব্দ লেখো:
একটি করে দেওয়া হলো, { বাঁধা; ধাঁধা }উত্তরঃ:
ঝোলা; ভোলা
যক্ষিরাজ; পক্ষীরাজ
ঝলমলে; টলটলে
নন্দিনী; বন্দিনি
৫. বাক্য বাড়াও:
৫.১) শীতকালে হাওয়া বইছে। (কেমন হাওয়া?)উত্তরঃ: শীতকালে উত্তুরে হাওয়া বইছে।
৫.২) গল্পবুড়ো ডাকছে। (কেমন বুড়ো?)
উত্তরঃ: থুথ্ঠুড়ে গল্পবুড়ো ডাকছে।
৫.৩) গল্পবুড়োর মুখ ব্যথা। (মুখ ব্যথা কেন?)
উত্তরঃ: চেঁচিয়ে ডাক পেড়ে গল্পবুড়োর মুখ ব্যথা।
৫.৪) গল্পবুড়োর ঝোলা আছে। (কোথায় ঝোলা?)
উত্তরঃ: গল্পবুড়োর কাঁধে ঝোলা আছে।
৫.৫) দেখবি যদি, আয়। (কীভাবে আসবে?)
উত্তরঃ: দেখবি যদি জলদি আয়।
৬. ‘ক’ এর সঙ্গে ‘খ’ মিলিয়ে লেখো:
ক | খ |
---|---|
তল্পি | ঝোলা |
রূপকথা | কাল্পনিক গল্প |
ভোরে | বিহানে |
পবন | বাতাস |
সত্বর | দ্রুত |
৭. ‘ডাকছে রে’ আর ‘ডাক ছেড়ে’ শব্দজোড়ার মধ্যে কি পার্থক্য তা দুটি বাক্য রচনা করে দেখাও:
যেমনঃ বাছুরটি ডাক ছেড়ে মাকে ডাকছে রে।উত্তরঃ
ডাকছে রেঃ কাউকে ডাকছে, আহ্বান করছে।
ডাক ছেড়েঃ জোরে চিৎকার দিয়ে কাঁদছে বা বলছে।
৮. নিচের শব্দগুলো থেকে বিশেষ্য ও বিশেষণ আলাদা করো:
বিশেষ্যঃ তল্পি, ঝোলা, শীত, রাজপুত্তুর, কারখানা।বিশেষণঃ উত্তুরে, থুথ্ঠুড়ে, জলদি, আজগুবি, সত্বর।
৯. পক্ষীরাজ এর মতো (ক্+ষ্ = 'ক্ষ্') রয়েছে এমন পাঁচটি শব্দ তৈরি করোঃ
উত্তরঃ১. যক্ষিরাজ
২. পক্ষীরাজ
৩. রক্ষী
৪. ক্ষণিক
৫. পরীক্ষক
১০. ক্রিয়ার নীচে দাগ দাওঃ
১০.১) বইছে হাওয়া উত্তুরে।উত্তরঃ বইছে।
১০.২) ডাক ছেড়ে সে ডাকছে রে।
উত্তরঃ ডাক ছেড়ে, ডাকছে।
১০.৩) আয় রে ছুটে ছোট্টরা।
উত্তরঃ আয়, ছুটে।
১০.৪) দেখবি যদি জলদি আয়।
উত্তরঃ দেখবি, আয়।
১০.৫) চেঁচিয়ে যে তার মুখ ব্যথা।
উত্তরঃ চেঁচিয়ে।
১১. তোমার দৃষ্টিতে গল্পবুড়োর সাজ-পোশাকটি কেমন হবে, তা একটি ছবিতে আঁকোঃ
আলোচনাঃ এখানে তোমরা একজন বয়স্ক লোকের ছবি আঁকবে, যার সারা শরীরে একটি চাদর দিয়ে ঢাকা। পিঠে একটি পুটলি অর্থাৎ একটি ঝোলা আঁকবে।১২. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর নিজের ভাষায় দাওঃ
১২.১) গল্পবুড়ো কখন গল্প শোনাতে আসে?উত্তরঃ শীতের ভোরে, যখন উত্তর দিকে হাওয়া বইতে থাকে, তখন গল্পবুড়ো গল্প শোনাতে আসে।
১২.২) গল্পবুড়োর ঝোলায় কী কী ধরনের গল্প রয়েছে?
উত্তরঃ গল্পবুড়োর ঝোলায় রয়েছে দত্যি-দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ, আজগুবি, কারখানা, তেপান্তরের মাঠ, হট্টমেলার হাট, কেশবতী নন্দিনী ইত্যাদি রূপকথার গল্প।
১২.৩) গল্পবুড়ো শীতকালের ভোরে ছোটদের কীভাবে ঘুম থেকে ওঠাতে চান?
উত্তরঃ গল্পবুড়ো শীতকালের ভোরে ‘রূপকথা চাই, রূপকথা’ বলে হাঁক দিয়ে, লোভনীয় গল্প শুনিয়ে ছোটদের ঘুম থেকে ওঠাতে চান।
১২.৪) ‘রূপকথা’র কোন কোন বিষয় কবিতাটিতে আছে?
উত্তরঃ কবিতাটিতে রয়েছে দত্যি, দানব, যক্ষিরাজ, রাজপুত্তুর, পক্ষীরাজ—এগুলো ‘রূপকথা’র বিষয়।
১২.৫) গল্পবুড়ো কাদের গল্প শোনাবে না?
উত্তরঃ যারা ঘুম থেকে উঠে ছুটে আসবে না, অলস বা মূর্খ যারা তার ডাকে সাড়া দেবে না—গল্পবুড়ো তাদের গল্প শোনাবে না।
১৩. তোমার পড়া অথবা শোনা একটি রূপকথার গল্প নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তরঃ কোনো এক গ্রামে এক গরিব নাপিত এবং তার স্ত্রী বসবাস করত। তারা দুজনেই খুব সরল ও ভালো মানুষ ছিল। সংসারের অভাবের মধ্যেও তারা সবসময় আনন্দে থাকার চেষ্টা করত। নাপিতের বেশিরভাগ দিন খদ্দের না-পেয়ে ঘুরে ঘুরে কেটে যেত। মাঝে মাঝে কাজের জন্য তাকে গ্রামের বাইরেও যেতে হত।একদিন সকালে নাপিত চুল-দাড়ি কাটার জন্য গ্রামের পথে পথে ঘুরছিল। সেই সময় সে দ্যাখে, গ্রামের জমিদারের পেয়াদা এক থামের পাশে বসে বিশ্রাম নিচ্ছে। নাপিত ভাবল আজ দিনটা ভালো, সকালে উঠেই একটা খদ্দের পাওয়া গেল। পেয়াদা তাকে দেখেই বলল, তার চুল ও দাড়ি বড়ো হয়েছে এবং সে যেন তা ভালো করে কেটে দেয়। কিন্তু সে একটি শর্ত দিল। সে যেন তার গোঁফজোড়া না-কাটে।
তার কথামতো নাপিত জমিদারের পেয়াদার চুল ও দাড়ি কাটতে লাগল। এমন সময় এক মাছি এসে বসল নাপিতের মুখের সামনে। মাছিটি সমানে নাপিতকে বিরক্ত করতে থাকল। ফলে নাপিতের মনোযোগের ব্যাঘাত ঘটল এবং সে ভুল করে জমিদারের পেয়াদার বড়ো গোঁফজোড়া কেটে দিল। তা দেখে পেয়াদা প্রচন্ড রেগে গিয়ে নাপিতকে মারতে চাইল। নাপিত প্রাণের ভয়ে পালাতে পালাতে গ্রামের শেষ সীমানায় এক বনের মধ্যে আশ্রয় নিল।
পেয়াদার ভয়ে সে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বনের মধ্যে লুকিয়ে থাকল। শেষে ক্লান্ত হয়ে এক বটগাছের তলায় ঘুমিয়ে পড়ল। ওই বটগাছে বাস করত এক মানুষখেকো ভূত। সে নাপিতকে দেখে মহানন্দে থাকল। ভাবল, রাতে তার ঘাড় মটকে খাবে।
নাপিতের যখন ঘুম ভাঙল তখন সে দেখল, রাত হয়ে গিয়েছে। রাত হওয়াতে সে বাড়ি ফিরতে পারল না। ভাবল, আজ রাতটা এই গাছের তলায় সে কাটিয়ে দেবে। ভাবতে না-ভাবতেই সেই মানুষখেকো ভূত নাপিতের সামনে এসে তাকে ভয় দেখাতে শুরু করল। নাপিত তাকে দেখে ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেল। সে ভাবল, তার শেষ দিন উপস্থিত। ঠিক এমন সময় তার মাথায় একটা বুদ্ধি এল।
সে তার বাক্স থেকে আয়না বের করে ভূতের সামনে ধরে বলল, “দ্যাখ আমি এই আয়নার মধ্যে তোর মতো আর একটি ভূতকে ধরে রেখেছি”। ভূত উকি মেরে দ্যাখে, সত্যি আয়নার মধ্যে তার মতন আর একটা ভূতকে দেখা যাচ্ছে। এটা দেখার পর ভূত ভয় পেয়ে নাপিতের কাছে বলতে লাগল, তাকে যেন সে আয়নার মধ্যে না-পুরে ফেলে। তার যা লাগবে, ভূত তাকে সব এনে দেবে।
এই কথা শুনে, বুদ্ধিমান নাপিত তাদের দারিদ্র্যের কথা মনে করে ভূতকে বলে যে, তাকে একটা মস্তবড়ো বাড়ি তৈরি করে দিতে হবে এবং তার সঙ্গে দুটো ধানের গোলা দিতে হবে। ভূত তার কথা শুনে তখনই রাজি হয়ে গেল। এরপর নাপিত তাকে বলল, সে যেন তার পিঠে করে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
কথামাত্রই ভূত পিঠে করে নাপিতকে তার বাড়ির উঠোনে নামিয়ে দিল এবং বলল, সকালের মধ্যে তার বাড়ি ও ধানের গোলা তৈরি হয়ে যাবে।
পরেরদিন সকালে উঠে নাপিত ও তার স্ত্রী সব দেখে অবাক। তারা দুজনে দ্যাখে যে, তাদের খড়ের বাড়ির পাশে এক মস্ত অট্টালিকা এবং তার পাশে দুটো ধানে ভরা গোলা। নতুন বাড়ি ও দুটো ধানের গোলা পেয়ে নাপিত ও তার স্ত্রী খুব আনন্দ পেল। এরপর থেকে তারা দুজনে মিলে ওই গ্রামে মহানন্দে বসবাস করতে লাগল।
আরো পড়ুন:
বাংলা মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীদের জন্য শিক্ষামূলক ব্লগ