Type Here to Get Search Results !

জ্ঞানচক্ষু গল্পের গুরুত্বপূর্ণ ৫ মার্কের প্রশ্ন | মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2026

0
জ্ঞানচক্ষু গল্প, মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2026জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্নের বাংলা সাজেশন — মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য

      2026 এর প্রিয় মাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীরা তোমাদের সুবিধার্থে বাংলা আশাপূর্ণা দেবীর 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ LAQ অর্থাৎ রচনাধর্মী প্রশ্ন ও তার উত্তর পোস্ট করা হল, পরবর্তীকালে তোমাদের Last Minute Suggestion হিসেবে আরো Short (বাছাই করা) প্রশ্ন দেওয়া হবে। অতএব আমাদের মাধ্যমিক 2026 এর টেলেগ্রাম গ্রুপে Join করো, For Updates "Telegram Group"   


1. "তপন আর পড়তে পারে না। বোবার মত বসে থাকে"-তপনের এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা করো। [মাধ্যমিক ১৮] অনুরূপ প্রশ্নঃ

'এর প্রত্যেকটি লাইন তো নতুন আনকোরা, তপনের অপরিচিত। এর মধ্যে তপন কোথায়?'-'এর' বলতে কীসের কথা বলা হয়েছে? তপনের কাছে কেন তা অপরিচিত মনে হয়েছিল?

উত্তরঃ বিশিষ্ট লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর রচিত জ্ঞানচক্ষু গল্পে লেখিকা তপন নামে এক কিশোর বালকের গল্প লেখার দুর্বার বাসনা এবং পরিণামে তার মোহভঙ্গের কাহিনি বর্ণনা করেছেন। 
◆ কল্পনাবিলাসী তপন ছেলেবেলা থেকেই মনে করতো যে, লেখকরা বুঝি 'আকাশ থেকে পড়া জীব'। কিন্তু ছোটমেসো মেসোমশাইকে দেখবার পর লেখক সম্পর্কে তার ভুল ধারণা ভেঙ্গে যায়। সে বুঝতে পারে, লেখকরাও সাধারণ মানুষ হন অর্থাৎ যে কোনো সাধারণ মানুষই গল্প লিখতে পারে। ভাবনার সঙ্গে সংগতি রেখে পুলকিত তপন একাসনে বসে লিখে ফেলে একটি গল্প।' মেসোমশাইয়ের সুপারিশে গল্পটি 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকাতে ছাপাও হয়। সেই গল্প সংখ্যাটি হাতে নিয়ে মাসি-মেসো তপনদের বাড়িতে হাজির হলে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়। বাড়ির সকলে পত্রিকাটিতে এক ঝলক চোখ বুজিয়ে নিয়ে তপনকে বাহবা দিতে থাকেন। ঠিক সেই সময়ে মৃদু হেসে মেসোমশাই জানিয়ে দেন-কাঁচা হাতের এই গল্পটিকে তিনি 'একটু-আধটু কারেকশন' করে ছাপিয়েছেন। 'এই 'কারেকশনের' বিষয়টি জানার পর বাড়ির সকলেই তপনের এই হঠাৎ লেখক হয়ে ওঠার বিষয়টিকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতে শুরু করেন।
 
   অবশেষে সমস্ত বিদ্রুপ উপেক্ষা করে মায়ের অনুরোধে নিজের লেখা 'প্রথম দিন' নামাঙ্কিত গল্পটি পড়তে গিয়ে তপনরে মাথায় যেন বজ্রাঘাত হয়। ছাপা গল্পের মধ্যে সে নিজের সৃষ্টির অনুপস্থিতি দেখে হতবাক হয়। গল্পের প্রত্যেকটা লাইনে তার কাছে 'নতুন আনকোরা' বলে মনে হতে থাকে। তপন বুঝে যায় মেসোমশাই তপনের কাঁচা লেখাটিকে বাদ দিয়ে নিজের পাকা কলমে গল্পটি নতুন করে লিখেছেন। পত্রিকার পাতায় ছাপা হওয়া গোটা গল্পে তপন নিজের চিহ্নমাত্র খুঁজে পায় না। অভিমান ও কষ্টে তপন বোবার মতো স্তব্ধ হয়ে বসে থাকে-আর পড়তে পারেনা। 


2. 'গল্প ছাপা হলে যে ভয়ঙ্কর আহ্লাদটা হওয়ার কথা, সে আহ্লাদটা খুঁজে পায় না'-কার গল্প, কোথায় ছাপা হয়েছিল? কোন্ আহ্লাদের কথা বলা হয়েছে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কেন-সেই আহ্লাদ খুঁজে পায়নি? এই প্রশ্নের উত্তর অনুসারে লেখা যায়: 'তপন যেন কোথায় হারিয়ে যায় এইসব কথার মধ্যে'- কোন্ সব কথার মধ্যে তপন হারিয়ে গিয়েছিল? কেন হারিয়ে গিয়েছিলে?


উত্তরঃ বাংলা সাহিত্যের অনন্যা লেখিকা আশাপূর্ণ দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনের লেখা গল্প 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।

◆ নিজের লেখা গল্প পত্রিকার পাতায় ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হলে যে ভয়ংকর আহ্লাদ বা আনন্দ হওয়ার কথা সৃষ্টিসুখ জনিত সেই আহ্লাদের কথা প্রশ্নোদ্ভূত অংশে বলা হয়েছে।

 আহ্লাদিত না হওয়ার কারণ: তপনের লেখা গল্প 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হওয়ায়
খবর শুনে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়। পত্রিকা হাতে নিয়ে সকলেই তপনকে বাহবা দিতে থাকেন। ঠিক সেই সময় তপনের মেসোমশাই মৃদু হেসে জানিয়ে দেন- "একটু-আধটু 'কারেকশন' করতে হয়েছে অবশ্য। নেহাত কাঁচা তো।” এই 'কারেকশন'-এর বিষয়টি নিয়ে বাড়িতে গুঞ্জন ওঠে। সকলের ধারণা হয় মেসোমশাইয়ের সৌজন্যেই তপনের গল্পটি ছাপার মর্যাদা পেয়েছে। তাই সকলে নির্দ্বিধায় তপনকে উপহাস ও কটাক্ষ করতে শুরু করেন-
(ক) বাবার মতামতঃ তপনের কৃতিত্বকে লঘু করে তার বাবা বলে বসেন "তাই। তা নইলে ফট করে একটা লিখল, আর ছাপা হল-'
(খ) মেজকাকুর কটাক্ষ: মেজকাকু তপনকে বিদ্রুপ করে ঈষৎ (কিছুটা বা অল্প) আক্ষেপের সুরে বলে বসেন "ওরকম একটি লেখক মেসো থাকা মন্দ নয়, আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম।"
(গ) বাড়ির অন্যান্যদের বক্তব্য: বাড়ির সকলে মেসোমশাইয়ের মহত্বের বর্ণনায় পঞ্চমুখ হয়ে পড়েন। তাদের মতে-'উনি নিজে গিয়ে না দিলে কি আর 'সন্ধ্যাতারা'-র সম্পাদক তপনের গল্প কড়ে আঙুল দিয়ে ছুঁতো?'

  -এভাবে 'কারেকশন'-এর কথাটা পাঁচ কান হওয়ার পর, তপনের কৃতিত্বের আলোচনা ক্রমশ মেসোমশাইয়ের হস্তক্ষেপের আলোচনায় পরিণত হয়। সকলের মুখে নিজের প্রতি বিদ্রূপবাণী শুনে তপনের মনে তীব্র আত্মদহনের সৃষ্টি হয় আর সকলের ঠাট্টা-তামাশা গোলকধাঁধায় হারিয়ে যায় তার সৃষ্টিসুখের আহ্লাদ। 


3. 'তপনের মনে হয় তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন'-কোন্ দিনটির কথা বলা হয়েছে? কেন তা দুঃখের? [মাধ্যমিক ২৩] 


অনুরূপ প্রশ্নঃ 

'সত্যিই তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন এলো আজ'-কখন তপনের এমন মনে হয়েছে? শেষে তার কেমন অভিজ্ঞতা হয়? [আলিম ২২] 


এই প্রশ্নের উত্তর অবলম্বনে লেখা যায়ঃ

'তপন ছাতে উঠে গিয়ে শার্টের তলাটা দিয়ে চোখ মোছে'-কখন তপন এমনটা করে? তপনের এই আচরণের কারণ কী? 


এই প্রশ্নের উত্তর অবলম্বনে লেখা যায়ঃ 

'তপন গড়গড়িয়ে পড়ে যায়। তপনের মাথায় ঢোকে না সে কী পড়ছে"-তপন কী পড়ছিল? এমনভাবে পড়ে যাওয়ার কারণ কী? 


এই প্রশ্নের উত্তর অবলম্বনে লেখা যায়ঃ 

'তপনকে যেন নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়তে না হয়'- কোন্ ঘটনার প্রেক্ষিতে তপনের এই সংকল্প?

এই প্রশ্নের উত্তর অবলম্বনে লেখা যায়: 

'তপন লজ্জায় ভেঙে পড়তে যায়”- তপন কী পড়তে গিয়েছিল? তার অভিজ্ঞতা কেমন হয়েছিল? 


উত্তরঃ বাংলা সাহিত্যের অনন্যা লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী রচিত "জ্ঞানচক্ষু' গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে।

দুঃখের দিন: 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় প্রকাশিত তপনের প্রথম গল্পটি যেদিন তার মায়ের কথায় তপন বাড়ির সকলকে পড়ে শোনায় সেদিন তপনের মনে এমন প্রতিক্রিয়া ঘটে।

 দিনটি দুঃখের মনে হওয়ার কারণ: কল্পনাবিলাসী তপন ছেলেবেলা থেকেই মনে
করতো যে, লেখকরা বুঝি 'আকাশ থেকে পড়া জীব'। কিন্তু ছোটমেসো মেসোমশাইকে দেখবার পর লেখক সম্পর্কে তার ভুল ধারণা ভেঙ্গে যায়। সে বুঝতে পারে, লেখকরাও সাধারণ মানুষ হন অর্থাৎ যে কোনো সাধারণ মানুষই গল্প লিখতে পারে। ভাবনার সঙ্গে সংগতি রেখে পুলকিত তপন একাসনে বসে লিখে ফেলে একটি গল্প। মেসোমশাইয়ের সুপারিশে গল্পটি 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকাতে ছাপাও হয়। সেই গল্প সংখ্যাটি হাতে নিয়ে মাসি-মেসো তপনদের বাড়িতে হাজির হলে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়। বাড়ির সকলে পত্রিকাটিতে এক ঝলক চোখ বুজিয়ে নিয়ে তপনকে বাহবা দিতে থাকেন। ঠিক সেই সময়ে মৃদু হেসে মেসোমশাই জানিয়ে দেন-কাঁচা হাতের এই গল্পটিকে তিনি 'একটু-আধটু কারেকশন' করে ছাপিয়েছেন। 'এই 'কারেকশনের' বিষয়টি জানার পর বাড়ির সকলেই তপনের এই হঠাৎ লেখক হয়ে ওঠার বিষয়টিকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতে শুরু করেন।

    অবশেষে সমস্ত বিদ্রূপ উপেক্ষা করে মায়ের অনুরোধে নিজের লেখা 'প্রথম দিন' নামাঙ্কিত গল্পটি পড়তে গিয়ে তপনের মাথায় যেন বজ্রাঘাত হয়। সে বুঝতে পারে, তার কাঁচা হাতে লেখা গল্পটিকে মেসোমশাই কারেকশনের নামে পুরোটাই বদলে দিয়েছেন। নিজের সৃষ্টিকে এভাবে রাহাগ্রস্ত হতে দেখে তপনের আত্মমর্যাদা বোধ প্রবলভাবে ধাক্কা খায়। নিজের নামে অন্যের লেখা পড়ার দুঃখ তাকে গ্রাস করে। 'সন্ধ্যাতারা'র সেই বহু প্রতিকৃত সংখ্যাটি হাতে পেয়ে প্রথমে তপনের সেই দিনটিকে জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন মনে করলেও, মেসোর প্রতারণায় তার মোহভঙ্গ হয়। অভিমান আর যন্ত্রণার দাবানলে দগ্ধ হয়ে তপনের সমস্ত উৎসাহ ও আনন্দ পরিণত হয় চোখের জলে। সবচেয়ে আনন্দের দিন হতে পারা তারিখটি তার কাছে হয়ে ওঠে জীবনের 'সবচেয়ে দুঃখের দিন।'


4. "এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন”- কোন্ মুহূর্তটি দুঃখের? তপন কী সংকল্প করেছিল?    [আলিম ২২]

 এই প্রশ্নের উত্তর অবলম্বনে লেখা যায়ঃ "তপন বইটা ফেলে রেখে চলে যায়, তপন ছাতে উঠে শার্টের তলাটা তুলে চোখ মোছে"- কোন্ বইটির কথা বলা হয়েছে? তপনের এমন আচরণের কারণ কী? অথবাঃ "তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই, তার চেয়ে অপমানের" -কার চেয়ে দুঃখের অপমানের কথা বলা হয়েছে? এরকম মনে হওয়ার কারণ কী?


উত্তরঃবিশিষ্ট লেখিকা আশাপূর্ণ দেবী রচিত "জ্ঞানচক্ষু” গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে।

দুঃখের মুহূর্তঃ  'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকা থেকে তপন নিজের লেখা গল্পটা মাকে পড়ে শোনাতে গিয়ে বুঝতে পারে, মেসোমশাই তার লেখাটিকে আগাগোড়াই কারেকশন করে ছাপিয়েছেন। নিজের লেখা গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়ার মতো গভীর দুঃখের মুহূর্তের কথা আলোচ্য অংশে বলা হয়েছে।

 তপনের সংকল্পঃ কল্পনাবিলাসী তপন ছেলেবেলা থেকেই মনে করতো যে, লেখকরা বুঝি 'আকাশ থেকে পড়া জীব'। কিন্তু ছোটমেসো মেসোমশাইকে দেখবার পর লেখক সম্পর্কে তার ভুল ধারণা ভেঙ্গে যায়। সে বুঝতে পারে, লেখকরাও সাধারণ মানুষ অর্থাৎ যে কোনো সাধারণ মানুষই গল্প লিখতে পারে। ভাবনার সঙ্গে সংগতি রেখে পুলকিত তপন একাসনে বসে লিখে ফেলে একটি গল্প। মেসোমশাইয়ের সুপারিশে গল্পটি 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকাতে ছাপাও হয়। সেই গল্প সংখ্যাটি হাতে নিয়ে মাসি-মেসো তপনদের বাড়িতে হাজির হলে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়। বাড়ির সকলে পত্রিকাটিতে এক ঝলক চোখ বুজিয়ে নিয়ে তপনকে বাহবা দিতে থাকেন। ঠিক সেই সময়ে মৃদু হেসে মেসোমশাই জানিয়ে দেন-কাঁচা হাতের এই গল্পটিকে তিনি 'একটু-আধটু কারেকশন' করে ছাপিয়েছেন। 'এই 'কারেকশনের' বিষয়টি জানার পর বাড়ির সকলেই তপনের এই হঠাৎ লেখক হয়ে ওঠার বিষয়টিকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতে শুরু করেন। 

     অবশেষে সমস্ত বিদ্রূপ উপেক্ষা করে মায়ের অনুরোধে নিজের লেখা 'প্রথম দিন' নামাঙ্কিত গল্পটি পড়তে গিয়ে তপনের মাথায় যেন বজ্রাঘাত হয়। ছাপা গল্পের মধ্যে নিজের সৃষ্টির অনুপস্থিতি দেখে সে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে। তারপর মায়ের ধমক শুনে, সমস্ত দুঃখ বুকে চেপে গড়গড়িয়ে গোটা গল্পটি পড়ে ফেলে। গল্পপাঠ শেষ করে মনবেদনায় দগ্ধ হয়ে তপন চলে যায় বাড়ির ছাদে। সকলের আড়ালে চোখের জল ফেলে আর সংকল্প করে-ঘটনার পুনরাবৃত্তি সে আর হতে দেবে না; এবার সে আত্মনির্ভরশীল হবে। ভবিষ্যতে গল্প ছাপতে দিলে নিজে পত্রিকা অফিসে গিয়ে লেখা জমা দিয়ে আসবে। তাতে লেখা ছাপা হয় হোক, না হয় না হোক। কিন্তু সে আর কখনোই অন্যের করুণার পাত্র হবে না এবং নিজের নামে অন্যের লেখা গল্প আর পড়বে না।



5. 'নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের'-জ্ঞানচক্ষু বলতে কী বোঝ? তপনের জ্ঞানচক্ষু কীভাবে খুলে গিয়েছিল?

[আলিম ২০, হাই মাদ্রাসা ১৮] 

উত্তরঃপ্রতিশ্রুতিমান লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী প্রণীত জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে।

◆ জ্ঞানচক্ষু' শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল অন্তর্দৃষ্টি বা বোধোদয়।

◆ কল্পনাবিলাসী তপন ছেলেবেলা থেকেই মনে করতো যে, লেখকরা বুঝি 'আকাশ থেকে পড়া জীব'। কিন্তু নতুন মেসোমশাইকে স্বচক্ষে দেখার পর তপনের মন থেকে ভ্রান্ত ধারণা দূর হয়। তপন লক্ষ্য করে অন্যরা যেমন দাড়ি কামান, সিগারেট খান, খেতে বলে অর্ধেক খাবার তুলিয়ে দেন, ঘুমোন, স্নান করেন লেখক মেসোও সেই সব করেন। অর্থাৎ লেখক মেসোমশাইয়ের জীবন প্রণালীর সঙ্গে তপনের বাবা, মেজ কাকু বা ছোট মামাদের জীবনপ্রণালীর সঙ্গে কোনো পার্থক্য নেই।-লেখিকার শব্দ চয়ন অনুসারে এভাবেই তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে গিয়েছিল। কিন্তু সমগ্র গল্পটি পাঠ করলে পাঠকের বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না যে, গল্পের শেষাংশে পৌছে তপনের প্রকৃত জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল। 

     নতুন মেসোমশাই অর্থাৎ লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন একটি গল্প লেখে। মেসোমশাইয়ের সুপারিশে গল্পটি 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকাতে ছাপাও হয়। মেসোমশাই জানিয়ে দেন তিনি তপনের গল্পটিকে 'কারেকশন' করে পত্রিকায় ছাপিয়েছেন। কথাটি শোনার পর বাড়ির সকলে তপনের কৃতিত্বকে খাটো করে নানান ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করতে থাকেন।  

   অবশেষে সমস্ত বিদ্রুপ উপেক্ষা করে মায়ের অনুরোধে নিজের লেখা 'প্রথম দিন' নামাঙ্কিত গল্পটি পড়তে গিয়ে তপনের মাথায় যেন বজ্রাঘাত হয়। গল্পের প্রত্যেকটা লাইনে তার কাছে 'নতুন আনকোরা' বলে মনে হতে থাকে। তপন বুঝতে পারে মেসোমশাই তপনের কাঁচা লেখাটিকে বাদ দিয়ে নিজের পাকা কলমে গল্পটির পুননির্মাণ করে পত্রিকায় ছাপিয়েছেন। মেসোর এই কান্ড তপনকে প্রবলভাবে আহত করে। নিজের লেখা পড়তে গিয়ে অন্যের লেখা লাইন পড়তে পড়তে তার আত্মমর্যাদাবোধ প্রবলভাবে ধাক্কা খায়। সে উপলব্ধি করে- পরনির্ভরশীলতাই তাকে প্রতারিত করেছে। এবার তাকে আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। এজন্যই সে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়, ভবিষ্যতে গল্প ছাপতে দিলে অন্যের হাতে নয়; নিজে পত্রিকা অফিসে গিয়ে লেখা জমা দিয়ে আসবে। কারণ অন্যের লেখা গল্প নিজের নামে ছাপানোর মধ্যে কোনো সৃষ্টির আহ্বান নেই, আছে যন্ত্রণা।

   -এভাবেই দুঃখের কড়ি দিয়ে তপন কিনে নেয় জীবনের সত্যকে। তার চোখ থেকে মায়াবরণ সরে যায়, কিশোর তখন আছড়ে পড়ে বাস্তবের কঠিন মাটিতে। অনুশোচনার চাবুক তার প্রতিজ্ঞাকে দৃঢ় করে তোলে। এভাবেই গল্পের উপান্তে (শেষে) উপনীত হয়ে তপনের প্রকৃত জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়। 



6. 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো। 

উত্তরঃকল্পনাবিলাসী তপন ছেলেবেলা থেকেই মনে করতো যে, লেখকরা বুঝি 'আকাশ থেকে ড়গড়িয়ে গোটা পড়া জীব'। কিন্তু নতুন মেসোমশাইকে স্বচক্ষে দেখার পর তপনের মন থেকে ভ্রান্ত ধারণা দূর হয়। তপন লক্ষ্য করে অন্যরা যেমন দাড়ি কামান, সিগারেট খান, খেতে বলে অর্ধেক খাবার তুলিয়ে দেন, ঘুমোন, স্নান করেন লেখক মেসোও সেই সব করেন। অর্থাৎ লেখক মেসোমশাইয়ের জীবন প্রণালীর সঙ্গে তপনের বাবা, মেজ কাকু বা ছোট মামাদের জীবনপ্রণালীর সঙ্গে কোনো পার্থক্য নেই।-লেখিকার শব্দ চয়ন অনুসারে এভাবেই তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে গিয়েছিল। কিন্তু সমগ্র গল্পটি পাঠ করলে পাঠকের বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না যে, গল্পের শেষাংশে পৌছে তপনের প্রকৃত জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল। 

     গল্পে তপন নামে এক কিশোর বালকের গল্প লেখার তীব্র বাসনা এবং পরিণামে তার মোহভঙ্গের কাহিনির আড়ালে মহাশ্বেতা দেবী আমাদের আত্মনির্ভরশীলতার মাধ্যমে আশা পূরণের বাণী শুনিয়েছেন। গল্পানুসারে তপন হয়তো ছোট্ট একটি ছেলে, কিন্তু অনুভূমির মানদন্ডে সে সমস্ত পাঠককুলের জ্ঞানচক্ষু। তাই সব দিক বিচার করে গল্পের এই ব্যঞ্জনধর্মী নামকরণটি সর্বাংশে সার্থক ও যথাযথ বলে প্রমাণিত হয়।



7. 'কোথাও কিছু উল্টোপাল্টা নেই, অন্যরকম নেই, একেবারে নিছক মানুষ"-কার সম্পর্কে এই উক্তি? বক্তা কীভাবে বুঝেছেন তিনি যে একেবারে নিছক মানুষটা? অনুরূপ প্রশ্নঃ 'লেখক মানে কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব না, তপনদের মতোই মানুষ"-তপন এই সিদ্ধান্তে কীভাবে উপনীত হয়েছিল?


উত্তরঃপ্রথিতযশা সাহিত্যিক আশাপূর্ণ দেবীর লেখা 'জ্ঞানচক্ষু' গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে। 

      তপনের ছোট মেসো অর্থাৎ নতুন মেসোমশাই সম্পর্কে প্রদত্ত উক্তিটি করা হয়েছে। 

     কল্পনাবিলাসী তপন ছেলেবেলা থেকেই মনে করতো যে, লেখকরা বুঝি 'আকাশ থেকে পড়া জীব।' এই অবস্থায় সে যখন জানতে পারে তার নতুন মেসোমশাই একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক, তখন তপন বিস্মিত হয়ে যায়। মামার বাড়িতে মেসোমশাইকে খুব কাছ থেকে দেখার ফলে তপন বুঝতে পারে-অন্যরা যেমন দাড়ি কামান, সিগারেট খান, খেতে বসে অর্ধেক খাবার তুলিয়ে দেন, ঘুমোন, স্নান করেন... লেখক মেসোও সেই সব করেন। অর্থাৎ লেখক মেসামশাইয়ের জীবনপ্রণালীর সঙ্গে তপনের বাবা, মেজকাবু বা ছোট মামাদের জীবন প্রণালীর সঙ্গে কোনো পার্থক্য নেই। এছাড়া ছোট মামাদের মতোই নতুন মেসোমশাই খবরের কাগজের নানান বিষয় নিয়ে প্রবল গল্প ও তর্ক করেন; শেষ পর্যন্ত 'এদেশের কিছু হবে না' বলে সেজেগুজে সিনেমা দেখতে কিংবা বেড়াতে বেরিয়ে যান। '

    তখন ভালোভাবেই বুঝতে পারে-লেখক মেসোমশাইয়ের মধ্যে কিছুই উল্টোপাল্টা নেই, অন্যরকম নেই, আর পাঁচটা নিছক সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেসোর কোনো পার্থক্য নেই-তিনি 'একেবারে নিছক মানুষ।' 



8. 'এই ভয়ানক আনন্দের খবরটা ছোট মাসিকে সর্বাগ্র দিয়ে বসে'- ভয়ানক আনন্দের খবর কোন্টি? খবরটি ছোট মাসিকে দেওয়ার ফল কী হয়েছিল? 


উত্তরঃসুসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর লেখা 'জ্ঞানচক্ষু' গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে।

◆ ভয়ানক আনন্দের খবরঃ লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে কিশোর তপন এক নিথর দুপুরে নিজের হোমটাস্কের খাতায় একটি আস্ত গল্প লিখে ফেলেছে। তপনের প্রথম গল্প লেখার সংবাদটিকেই এখানে 'ভয়ানক আনন্দের' খবর বলা হয়েছে।  

খবরটি ছোট মাসিকে দেওয়ার ফলঃ প্রত্যেকেই প্রিয়জনের কাছে নিজের সৃষ্টির কথাটি সবার আগে তুলে ধরতে ব্যাকুল হয়ে ওঠে। তপনও সেটাই করেছে। যদিও ছোটমাসি তপনের চাইতে ৮ বছরের বড়ো, তবুও মামার বাড়িতে এলে তপন তার সব আহ্লাদ মেটাতো ছোটমাসির কাছে। এজন্যেই গল্পলেখার ভয়ানক আনন্দের খবরটি সে সর্বাগ্রে ছোটো মাসিকে দিয়ে বসে।
ফলস্বরূপ-

  ক। মাসির সন্দেহ প্রকাশ ছোট মাসি তপনের গল্পটিতে সামান্য চোখ বুলিয়ে, তপনের অতিরঞ্জিত প্রশংসা করেন এবং গল্পটি সে কোনো জায়গা থেকে টুকলিফাই করেছে কিনা সেটা জানতে চায়।

  খ। মেসোকে দেখানোর সিদ্ধান্ত: এরপর তপনের ছোট মাসি গল্পটিকে তার লেখক স্বামীর কাছে দেখানোর জন্য নিয়ে যান।

 গ। মেসোমশাইয়ের ঘুম ভাঙানো: দিবানিদ্রায় রত স্বামীর ঘুম ভাঙ্গিয়ে তিনি মেসোকে গল্পটা
পড়ানোর জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন।

 ঘ। তপনের আপত্তি ছোট মাসি যখন তার স্বামীর হাতে গল্পটি তুলে দিচ্ছিলেন, তখন তপন মনে মনে পুলকিত হলেও মুখে 'না-আ-আ' করে তপন প্রবল আপত্তি জানাচ্ছিল।

ঙ। মেসোর প্রস্তাব: ছোট মেসোমশাই তপনের গল্পটির প্রশংসা করেন এবং সেটিকে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপানোর প্রস্তাব দেন।

 তপন প্রথমটা ঠাট্টা ভাবলেও মেসোর মুখে করুণাচল দেখে আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়। মাসিও তার স্বামীকে গল্পটি ছাপানোর জন্য অনুরোধ করেন।



Related Search : Madhyamik 2026 Bengali Question Paper || Madhyamik Bengali SAQ Suggestion 2026 || Madhyamik 2026 Bengali Short Question Answer || মাধ্যমেিক বাংলা সাজেশন ২০২৬ || Madhyamik Bengali Important Questions 2026 || Madhyamik Bengali SAQ and MCQ 2026 || Madhyamik Bengali Exam Preparation 2026 || জ্ঞানচক্ষু গল্প প্রশ্ন উত্তর মাধ্যমিক || জ্ঞানচক্ষু ৫ নম্বর প্রশ্ন বাংলা সাজেশন || jnanchokshu madhyamik bangla suggestion 2026 || jnanchokshu story 5 marks question answer || madhyamik bangla jnanchokshu long question || জ্ঞানচক্ষু গল্পের বড়ো প্রশ্ন PDF || জ্ঞানচক্ষু প্রশ্ন উত্তর wbexam || bongoshiksha jnanchokshu bangla notes || জ্ঞানচক্ষু গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন || madhyamik 2026 || bangla suggestion jnanchokshu

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
WhatsApp Join WhatsApp Telegram Join Telegram