ভারততীর্থ কবিতার প্রশ্ন উত্তর 2025 | Bharattirtha Kobita Question Answer 2025 | সপ্তম শ্রেণি বাংলা

ভারততীর্থ কবিতার প্রশ্ন উত্তর 2025 | Bhatartir Class 7 বাংলা, ভারততীর্থ কবিতার প্রশ্ন উত্তর 2025, ভারততীর্থ, Bhatartirth Kobita Question Answer 2025
ভারততীর্থ  কবিতার প্রশ্ন উত্তর 2025 | Bhatartirth Kobita Question Answer 2025 | সপ্তম শ্রেণি বাংলা

ভারততীর্থ কবিতা - প্রশ্নোত্তর ও টীকা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'ভারততীর্থ' কবিতা

ভারততীর্থ কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "গীতাঞ্জলি" কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "ভারততীর্থ" কবিতায় কবি বলেছেন যে, ভারতবর্ষ এমন এক দেশ, যেখানে নানা রকমের মানুষ, ধর্ম, ভাষা, ও সংস্কৃতি একসঙ্গে মিলেমিশে থাকে। এই দেশটা যেন একটা তীর্থস্থান — মানে পবিত্র জায়গা, যেখানে সবাই একসঙ্গে মিলিত হয়। ভারতবর্ষ শুধু নিজের দেশের মানুষের জন্য না, সে সবার জন্য দরজা খোলা রেখেছে। এখানে ভিন্ন মত, ভিন্ন পথ, ভিন্ন ভাষা ,সব একসঙ্গে থাকতে পারে। তাই কবি বলেন, ভারত যেন পৃথিবীর সব দিক থেকে আসা মানুষের একতা ও শান্তির জায়গা। শেষে কবি বলেন, এই মাটিতে যেন মানুষ ভালোবাসা ও সত্যের পথে চলে। এটাই ভারতের আসল পরিচয়।

১. কবিতায় ভারতভূমিকে ‘পুণ্যতীর্থ’ বলা হয়েছে কেন?
উত্তর: কারণ ভারতভূমি বহু সাধু, মুনি, ঋষি, মহান ব্যক্তিত্বের জন্মস্থান। এদেশে অনেক ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক কাজ হয়েছে, তাই একে পবিত্র তীর্থস্থান বলা হয়েছে।

২. 'মহামানবের সরণীতে’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন??
উত্তর: কবি বুঝিয়েছেন মহান ব্যক্তিদের দেখানো পথ, যাঁরা সত্য, ন্যায়, প্রেম ও সেবার আদর্শে জীবন কাটিয়েছেন।

৩. ভারতের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ধরা পড়েছে, কবিতায় থেকে এমন একটি পঙক্তি উদ্ধৃত করো।
উত্তর: “উত্তরে হিমালয়, দক্ষিণে সাগর” , এর দ্বারা ভারতের ভৌগোলিক বৈচিত্র্য ফুটে উঠেছে।

৪. ভারতবর্ষকে পদানত করতে কোন কোন বিদেশী শক্তি অতীতে এদেশে এসেছিল? তাদের পরিস্থিতি কী ঘটনা?
উত্তর: ইংরেজ, ফরাসি প্রভৃতি বিদেশী শক্তি এসেছিল। তারা শাসন করলেও ভারত তার সংস্কৃতি ও আত্মাকে হারায়নি।

৫. ‘পশ্চিমে আজ খুলিয়াছে দ্বার’ — কোন পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে? এমন পরিস্থিতিতে কবির আশা কী?
উত্তর:পশ্চিমি সভ্যতার দরজা ভারতীয়দের জন্য খুলেছে, জ্ঞান-বিজ্ঞান ছড়াচ্ছে। কবি আশা করেছেন, ভারত তা গ্রহণ করে উন্নতি করবে।

৬. ‘আমার শোণিতে রয়ে গেছে ধনিত সে বিচিত্র সুর’ — কোন সুরের কথা বলা হয়েছে? কেন বা সে সুর কবির রক্তে ধনিত হয়?
উত্তর:এই সুর হলো ভারতের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও বীরত্বের। কারণ কবি ভারতের সন্তান, তাই তাঁর রক্তে এই গৌরবের সুর বাজে।

৭. ‘হে বুদ্ধদীপ্ত, বাজো, বাজো, বাজো...’ — বুদ্ধদীপ্ত কী? কবি তার বেজে ওঠার প্রত্যাশী কেন?
উত্তর: বুদ্ধদীপ্ত মানে বুদ্ধের মত আলো জ্বালানো জ্ঞান ও শান্তির শক্তি। কবি চেয়েছেন সেই শক্তি জাগ্রত হোক।

৮. ‘আছে সে আলোয় লেখা’ — ভাগ্যে কী লেখা আছে? কবি কী শপথ গ্রহণ করলেন?
উত্তর: ভাগ্যে লেখা আছে জয় ও আশার দিন আসবে। কবি শপথ নিয়েছেন তিনি সেই আশার পথে চলবেন।

৯. ‘পোহায় রজনী’ — অন্ধকার রাত শেষে যে নতুন আশার আলো ফুটবে, তা কীভাবে ভারততীর্থ কবিতায় ফুটে উঠেছে?
উত্তর:কবি বলেছেন, ভারতবর্ষ অনেক কষ্ট সহ্য করেছে, এখন নতুন দিনের আলো আসছে। এটা হচ্ছে আশার বার্তা। 

১০. ‘মার অভিশাপে এসো না মোদের ধ্বংস’ — কবি কাকে ব্যাকুল আহ্বান জানিয়েছেন? কোন মার কথাই বা বলা হয়েছে?
উত্তর: কবি ঈশ্বরকে আহ্বান করেছেন। ‘মার অভিশাপ’ মানে দেশের দুঃখ ও পতন। তিনি প্রার্থনা করছেন যেন তা আর না আসে।
১১/ টীকা লেখো:

ওংকারধ্বনিঃ- ‘ওঁ’ বা ‘ওং’ ধ্বনি — এটি হিন্দু ধর্মের পবিত্র শব্দ। কবিতায় এটি দিয়ে বোঝানো হয়েছে আধ্যাত্মিকতার সূচনা ও ভারতের ধর্মীয় ঐতিহ্য।এই শব্দ উচ্চারণের মধ্যে একটি আধ্যাত্মিক শক্তি আছে বলে মনে করা হয় ।ভারতবর্ষের আধ্যাত্মিক চেতনা ও ধর্মীয় সংস্কৃতির ভিত্তি এই ওংকারধ্বনি।

শকঃ- শক ছিল মধ্য এশিয়ার যাযাবর বা ঘুরে বেড়ানো এক জাতি। তারা প্রাচীন কালে ভারতবর্ষে আক্রমণ করেছিল। যদিও প্রথমে তারা বিদেশি এবং শত্রু ছিল, ধীরে ধীরে তারা ভারতের সমাজে মিশে গিয়ে এখানকার সংস্কৃতির অংশ হয়ে যায়।তারা ভারতের রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতিতেও প্রভাব ফেলেছিল।কবি দেখাতে চেয়েছেন, ভারত সব জাতিকে আপন করে নেয়।

হুনঃ - হুনরাও একবার ভারত আক্রমণ করেছিল। তাদের দমন করে ভারত আবার মাথা তুলে দাঁড়ায়।হুন ছিল একটি যুদ্ধপ্রিয় ও ধ্বংসাত্মক জাতি। তারা অনেক রাজ্য আক্রমণ করে ধ্বংস করেছিল। কিন্তু সময়ের সাথে তারাও ভারতীয় সমাজে মিশে যায়।এতে বোঝা যায়, ভারতের মাটি এমন যে, যারা এক সময়ে শত্রু ছিল, তারাও এই দেশে এসে একসময় শান্তিপূর্ণভাবে থাকতে শিখেছে।

মোগলঃ- মোগলরা ছিল মধ্য এশিয়া থেকে আসা এক শাসকগোষ্ঠী। তারা ভারতে এসে মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে এবং বহু বছর ভারত শাসন করে।মোগল শাসকেরা যেমন আকবর, শাহজাহান, বাবর তারা শুধু যুদ্ধ করেই নয়, সুন্দর সুন্দর ইমারত, বাগান আর নতুন নতুন শাসনব্যবস্থা তৈরি করেছিল।তাদের আমলে ভারতের সংস্কৃতি, শিল্পকলা ও স্থাপত্য অনেক উন্নত হয়।

দ্রাবিড়ঃ- দ্রাবিড় জাতি দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন বাসিন্দা। কবিতা অনুযায়ী, উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের সকল জাতি মিলে ভারতকে গঠন করেছে।তারা দক্ষিণ ভারতে বসবাস করত। তাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম ছিল।তারা ছিল খুবই পরিশ্রমী, বুদ্ধিমান ও উন্নত সভ্যতার অধিকারী। দ্রাবিড়দের ভাষা থেকেই আজকের তামিল, তেলেগু, কন্নড় ইত্যাদি ভাষার উৎপত্তি হয়েছে।তারা ভারতের প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ইংরাজঃ - ইংরেজরা ভারত শাসন করলেও কবি বলছেন, ভারতের আত্মা, তার আধ্যাত্মিক শক্তি হারায়নি। তাই ভারত আজও মাথা উঁচু করে আছে।ইংরাজ বা ব্রিটিশরা ছিল ইংল্যান্ড (বর্তমান যুক্তরাজ্য) থেকে আসা শাসকগোষ্ঠী। তারা প্রথমে ভারতে ব্যবসা করতে আসে, পরে সুযোগ নিয়ে পুরো দেশ দখল করে ফেলে এবং প্রায় ২০০ বছর ভারত শাসন করে।ইংরাজ শাসনে অনেক ভালো জিনিস যেমন রেলপথ, ডাকব্যবস্থা তৈরি হয়, কিন্তু ভারতীয়দের অনেক কষ্টও হয়।শেষে বহু সংগ্রামের পর ভারত ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভ করে।

সারকথাঃ - কবি "ভারততীর্থ" কবিতায় বলেছেন, বহু জাতি-গোষ্ঠী ভারতবর্ষে এসেছে, শাসন করেছে, কিন্তু ভারত সকলকে আপন করে নিয়েছে — তার আত্মা অটুট থেকেছে।

১২. ভারতবর্ষের অতীত ইতিহাসের কথা কবিতায় কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর: কবিতায় বলা হয়েছে ভারতের গৌরবময় অতীত, রামায়ণ-মহাভারতের কথা, তপস্যা, বীরত্ব, সংস্কৃতি এসব কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “ভারততীর্থ” কবিতায় উঠে এসেছে।

১৩. কবির দৃষ্টিতে বর্তমান ভারতের যে স্বপ্নময় ছবি ধরা পড়েছে, তার পরিচয় দাও।

উত্তর: কবি আশা করেছেন ভারত আবার জ্ঞান, শান্তি, শক্তি ও মানবতার আলোয় উজ্জ্বল হবে।

১৪. বাক্য প্রয়োগ করো:

->উদারঃ - ভারতের হৃদয় সকল জাতির প্রতি উদার।
->ধৃতঃ - ইতিহাসে ধৃত আছে ভারতের গৌরবময় অতীত।
->পবিত্রঃ - গঙ্গা একটি পবিত্র নদী।
->লীনঃ - সে ধ্যানের মধ্যে লীন হয়ে গেছে।
->মন্ত্রঃ - পণ্ডিত মন্ত্র উচ্চারণ করলেন।
->অনলঃ - বেদনার অনল তার হৃদয় জ্বালিয়ে দিল।
->বিপুলঃ - ভারতের বিপুল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আছে।
->বিচিত্রঃ - আমাদের দেশে বিচিত্র ধর্ম ও ভাষার মানুষ বাস করে।
->সাধনাঃ - অনেক সাধনা করে কবি এই কবিতা লিখেছেন।
->জয়গানঃ - আমরা মাতৃভূমির জয়গান গাই।

১৫. প্রতিশব্দ লেখো:

সাগর – সমুদ্র।
ধরিত্রী – পৃথিবী।
ভূধর – পর্বতহিয়া।
হৃদয়রজনী – রাত।
নীর – জল।

১৬. “শালা” শব্দের একটি অর্থ গৃহ, আগার। “যজ্ঞশালা” শব্দটির মতো “শালা” পদযুক্ত আরও পাঁচটি শব্দ লেখো।

উত্তরঃ- ১. অন্নশালা ২. বিদ্যালয়শালা ৩. গ্রন্থশালা ৪. চিকিৎসাশালা ৫. শিল্পশালা।

১৭. নিচের পঙ্‌ক্তিগুলির গদ্য বাক্যে লেখোঃ

১৭.১ দূর্বর শ্রোতে এল কোথা হতে, সমুদ্র হলো হারা।
উত্তরঃ- কোথা থেকে যে এত দুর্বল স্রোত এল, তাতে বিশাল সমুদ্রও পরাজিত হলো।

১৭.২ উদার ছলে পরমানন্দে বন্দন করি তাঁরে।
উত্তরঃ- আনন্দ আর উদারতায় আমি তাঁকে বন্দনা করি।

১৭.৩ হৃদয়তন্ত্রী উঠেছিল রণরবি।
উত্তরঃ- মনে মনে বাজতে শুরু করেছিল যুদ্ধের ডাক।

১৭.৪ হেথায় নিত্য হেথা পবিত্র ধরিত্রীরো।
উত্তরঃ- এই দেশেই প্রতিদিন পবিত্র মাটির পূজা হয়।

১৭.৫ হেথায় সবারে হবে মিলিবার অনন্ত শিরে।
উত্তরঃ- এখানে সবাই মিলিত হবে ঈশ্বরের আশ্রয়ে।

১৮. বিশেষ্যগুলিকে বিশেষণ ও বিশেষণগুলিকে বিশেষ্য হিসেবে পরিবর্তিত করোঃ

চিত্ত - চিত্রণ
পুণ্য - পুণ্যময়
পবিত্র - পবিত্রতা
এক - একক
দ্বার - দ্বারিক
বিচার - বিচারক
তপস্যা - তপস্বী
দুঃখ - দুঃখী
জয় - জয়ী
জন্ম - জন্মদাতা
শুচি - পবিত্র
লাজ - লাজুক

১৯. সন্ধি বিচ্ছেদ করোঃ

পরমানন্দ – পরম + আনন্দ
দূর্বার – দুঃ + বার
ওঙ্কার – ওম্ + কার
হোমানল – হোম + অনল
দুঃসহ – দুঃ + সহ

২০. বিপরীতার্থক শব্দ লেখোঃ

-> পূণ্য – পাপ
-> ধীর – অধীর
-> ধৃত – অপধৃত
-> আহ্বান – বিসর্জন
-> দুর্বার – দুর্বল
-> বিচিত্র – একঘেয়ে
-> বহু – অল্প
-> অপমান – সম্মান
-> বিপুল – ক্ষুদ্র
-> ত্বরা – বিলম্ব


Written by : Muskan Parvin
Post by : bongoshiksha.in Team

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

© BongoShiksha.in. All rights reserved. Premium By Raushan Design